Logo
Logo
×

সারাদেশ

যৌনকর্মী দিয়ে ‘ব্ল্যাকমেইলের’ ঘটনায় খুন, আদালতে জবানবন্দি

Icon

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২৫ পিএম

যৌনকর্মী দিয়ে ‘ব্ল্যাকমেইলের’ ঘটনায় খুন, আদালতে জবানবন্দি

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ মহানগরীর বাস টার্মিনাল এলাকার গাজী বকুল খুনের ঘটনা উদঘাটন করেছে। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ খুনের সঙ্গে নারী ঘটনার সূত্র খুঁজে পেয়েছে। যৌনকর্মী দিয়ে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করার ঘটনায় খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে আদালতে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত তরিকুল ইসলাম বুধবার রাতে রংপুর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) কমিশনার মজিদ আলী।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) কমিশনার মজিদ আলী সংবাদমাধ্যমকে জানান, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামি তরিকুল ইসলাম স্বীকার করেছেন- তিনি হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এছাড়া অন্য কারা জড়িত ছিলেন তাও জানিয়েছেন।

তার জবানবন্দিতে জানা গেছে, মহানগরীর বাস টার্মিনাল এলাকায় জিসান আহমেদ নামের এক ব্যক্তির বাড়ি ভাড়া নিয়ে গাজী বকুল নামে এক ব্যক্তি পতিতাবৃত্তি চালিয়ে আসছিলেন। ঘটনার দিন গত বছরের ২৮ অক্টোবর রাতে নীলফামারী থেকে তরিকুল ও সুজন নামের দুইজনকে ওই ভাড়া বাসায় নিয়ে আসেন। নারীর ফাঁদ পেতে টাকার বিনিময়ে সেখানে থাকা দুই নারীর সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন ওই দুই ব্যক্তি।

তিনি আরও জানান, অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সময় গাজী বকুল ও তার সহযোগীরা ওই নারীসহ তরিকুলের বিবস্ত্র ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। পরে তরিকুলের কাছে চুক্তির টাকা ছাড়াও তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে বকুল ধারণকৃত ভিডিও এবং ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। একপর্যায়ে তারা টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করলে একটি কক্ষে আটকে রেখে টাকা সংগ্রহ করার সুযোগ দেন। এরই মধ্যে রাত গভীর হলে সুযোগ বুঝে তরিকুল ও সুজন কৌশলে রুম থেকে বের হয়ে বকুলের মুখ, হাত ও পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যান।

পুলিশ কমিশনার বলেন, খুনের ঘটনাটি ছিল ‘ক্লুলেস’। আমরা বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করি। সর্বশেষ একজন শিক্ষার্থী পুলিশকে জানায়, ওই বাড়িতে অপরিচিত উঠতি শিক্ষার্থী নারীসহ বিভিন্ন বয়সি নারী এবং অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা রয়েছে। এই সূত্র ধরে সন্দেহজনক একটি মোবাইল ফোন নম্বর পাওয়া যায়। ওই ফোন নম্বরের সূত্র ধরেই এ খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তরিকুলকে বুধবার সকালে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের আলোকে জড়িত থাকার অভিযোগে বাড়ির মূল মালিক জিসান আহমেদ ও জাবেদ আলী নামের আরও দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। তরিকুল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও বলেন, তদন্তে উঠে এসেছে ওই বাসায় পেশাদার পতিতা ছাড়াও ছাত্রীদের দিয়ে অনৈতিক কাজ করা হতো। বাড়ির মূল মালিক এবং খুনের শিকার ভাড়াটিয়া বকুল দুজনই সেখানে পতিতাবৃত্তি করাতেন। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট চুক্তির বিনিময়ে খদ্দের সংগ্রহ ছাড়াও সুযোগ বুঝে খদ্দেরদের ভিডিও এবং ছবি তুলে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিত।

নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের খবর পুলিশের কাছে রয়েছে। সেসব অনুসন্ধান করা হচ্ছে। বিষয়গুলো আমরা গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম