Logo
Logo
×

সারাদেশ

বার্ন ইউনিট প্রকল্প

পাহাড় কেটে চমেক হাসপাতালের নির্মাণ কাজ বন্ধ

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৪ এএম

পাহাড় কেটে চমেক হাসপাতালের নির্মাণ কাজ বন্ধ

ফাইল ছবি

ছাড়পত্র ছাড়াই পাহাড় কেটে বার্ন ইউনিট প্রকল্পের নির্মাণকাজ করছিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নজরে আসার পরপরই স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশে পাহাড় কাটার কাজ বন্ধ করা হয়। 

বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দীন এ তথ্য দিয়েছেন। তবে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কল পেয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকল্পের আওতায় পাহাড় কাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

চমেক হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দীন বলেন, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিউজ হওয়ার পর রিজওয়ানা ম্যাডাম স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ম্যাডামকে কল দিয়ে বিষয়টি জানান। এরপর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ম্যাডাম আমাকে কল দিয়ে পাহাড়ে যে কাজটি চলছে সেটা বন্ধ রাখতে বলেন। পরিবেশ অধিদফতরের অনুমতি নিয়েই পরে কাজ শুরু করার জন্য বলেন আমাকে। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করবো। ছাড়পত্র পেলে সে অনুযায়ী কাজ করব।

তিনি বলেন, ভৌত অবকাঠামোগত কাজ করার আগে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়কে ঢালু আকারে কেটে এতে চীনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলাম বসানো হবে। এর ফলে ভবিষ্যতে পাহাড় ধসের শঙ্কা কমে আসবে। যে জায়গায় পাইলিং করা হবে সেখানে উন্নতমানের ঘাস লাগানো হবে। যাতে বৃষ্টি হলে তা গড়িয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্কাশন করা যায়।

পরিচালক বলেন, এ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২ বছর; কিন্তু চীনা প্রতিনিধি দল নির্ধারিত সময়ের আগেই এ কাজ শেষ করে ফেলতে পারবে বলে জানিয়েছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। 

প্রকল্পের চীনা প্রতিনিধি দলের প্রধান মে ইইউ চ্যং বলেন, পাহাড়টা দেখার পর মনে হয়েছে পাশে ভবন হলে জায়গাটি নিরাপদ হবে না। কারণ ভবনে বেইজ করার সময় পাহাড় ধসে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। পাহাড়ের মাটিগুলো খুবই নরম। পানির স্পর্শ পেলে নিচের দিকে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রকৌশলীরা সয়েল নেইলিং প্রযুক্তির মাধ্যমে পাহাড়টি ড্রেসিং করে কলাম বসিয়ে কাজ করবে এবং সেখানে ঘাস রোপণ করা হবে।

তবে পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা চট্টগ্রামের ফিল্ড অফিসার ফারমিন এলাহী বলেন, গত বছরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছিল। আপনাদের সঙ্গে যখন চীনের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছিল তখন তো কথাটি এমন হওয়া উচিত ছিল যে, আপনারা পরিবেশের ছাড়পত্র নেবেন। কথা বলবেন। এরপর কাজে আগাবেন। গত ৫ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদফতর থেকে আপনাদের ওখানে পরিদর্শনে যায়। আমরাও গিয়েছিলাম। উনারা আপনাদের একটি নোটিশ দিয়েছিলেন। 

তিনি বলেন, আগামী ১৩ জানুয়ারি আপনাদের একটি শুনানি আছে। ওখানে পরিষ্কার বলে দিয়েছে পাহাড় কাটা নিয়ে ওনাদের কোনো অনুমোদন নেই। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো দায়িত্বশীল একটি প্রতিষ্ঠানের কাজ কেন প্রশ্নবিদ্ধ হবে? এটা আসলে আমরা আপনাদের কাছে আশা করি না।

২০২৪ সালের ৯ মে একনেকে অনুমোদন পায় ১৫০ শয্যার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট নির্মাণ প্রকল্প। নগরীর চট্টেশ্বরী রোডে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাসের পশ্চিমে গোয়াছি বাগান এলাকায় ২৮৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পের মধ্যে চীন সরকার অর্থায়ন করবে ১৮০ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ১০৫ কোটি টাকা। 

প্রকল্পের আওতায় একটি ছয়তলা ভবন নির্মিত হবে; কিন্তু অনুমতি পাওয়ার আগেই পাহাড় কেটে সেখানে প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে চমেক কর্তৃপক্ষ। পাহাড়ের কিছু অংশ কাটার পর বিষয়টি নজরে আসে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম