Logo
Logo
×

সারাদেশ

জিকে শামীমের সহযোগী সাবেক এমপি রতনের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, তাহিরপুর

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম

জিকে শামীমের সহযোগী সাবেক এমপি রতনের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক

সুনামগঞ্জ-১ আসনের তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের অবৈধ সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক)।মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ পৌর শহরে থাকা তার বাড়িতে গিয়ে সেটির পরিমাপ করেন দুদকের কর্মকর্তারা। এর আগে সোমবার তার গ্রামের বাড়ি জেলার ধর্মপাশা উপজেলার নওধার গ্রামে যান তারা। 

সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনি আসনটি জেলার ধর্মপাশা, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও মধ্যনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত।ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রথম দফায় ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মোয়াজ্জেম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

সাবেক এমপি রতনের বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতা বিতর্কিত ঠিকাদার জিকে শামীমের সঙ্গে সম্পর্ক, অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো কারবার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল।তখন তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।তার বিরুদ্ধে বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগও রয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুর এলাকায় থাকা রতনের বাড়ি ‘স্পর্শ স্পন্দন ড্রিম হাউসে’ যান দুদকের অনুসন্ধান দলের কর্মকর্তারা।সঙ্গে সুনামগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীরাও ছিলেন।তারা বাড়িটি পরিমাপ করেন। এই বাড়ির নাম আগে ‘পায়েল পিউ’ ছিল। বাড়িটি পরিমাপের সময় জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) কয়েকজন সদস্যও সেখানে ছিলেন।

সোমবার একইভাবে ধর্মপাশা উপজেলার নওধার গ্রামের তার বিলাসবহুল বাড়ি ‘হাওর বাংলায়’ গিয়ে সেটির পরিমাপ করা হয়।অনুসন্ধান টিমের সদস্য দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান ভূঁইয়া বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল। ৫ আগস্টের পর আরও কয়েকটি অভিযোগ দুদকে জমা হয়েছে।  

পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের পরিচালক আবদুল মাজেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে। এই দলের বাকি দুই সদস্য হলেন- দুদকের অতিরিক্ত পরিচালক গুলশান আনোয়ার ও উপসহকারী পরিচালক এলমান আহমেদ।

মাহমুদুল হাসান ভূঁইয়া বলেন, এর আগেও মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগে অনুসন্ধান হয়েছে। সেগুলোর তথ্য দুদকে আছে। এখন সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও ঢাকায় অনুসন্ধান চলছে। তারা সব জায়গায় যাবেন। অনুসন্ধান শেষে দুদকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেবেন।

দুদকের অনুসন্ধান টিমে থাকা এক সদস্য বলেন, সুনামগঞ্জ শহরের বাড়িতে মঙ্গলবার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে পাওয়া গেছে। দুদক কর্মকর্তারা মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। শহরের এই বাড়ি মোয়াজ্জেম হোসেনের নামে নয়, এটি তার দুই স্ত্রীর মধ্যে এক স্ত্রীর নামে রয়েছে বলে জানা গেছে।

২০০৭ সালে এ বাড়িটি কেনা হয়েছিল। পুরানো বাড়ির উত্তর পাশেই আরেকটি প্লটে নতুন করে দোকান তৈরির কাজ চলছে। এটি পরে কিনেছেন মোয়াজ্জেম হোসেন রতন।

মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বাড়িতে সাত বছর ধরে কাজ করেন মিঠুন মারাক।তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ শহরের বাসায় ৫ আগস্টের আগে থেকেই মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের দুই স্ত্রীর মধ্যে এক স্ত্রী ও তার দুই সন্তান বসবাস করছেন। মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়িতে গিয়েও তারা বসবাস করেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ২০০৮ সালে প্রথম নৌকা প্রতীক নিয়ে সুনামগঞ্জ-১  আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

কিন্তু ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন। পতিত আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সুনামগঞ্জ ও ধর্মপাশা আদালতে মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, তার ভাই সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকনসহ তাদের অনুসারীদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরপর থেকে রতনসহ তার অনুসারীরা আত্মগোপনে রয়েছেন। আত্মগোপনে থাকায় রতননের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম