Logo
Logo
×

সারাদেশ

স্কুলের ফাঁকে মায়ের পাশে ওরা!

Icon

মো. রইছ উদ্দিন, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)

প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম

স্কুলের ফাঁকে মায়ের পাশে ওরা!

গ্রামেও বাড়ছে জ্বালানি সংকট! উঠছে নতুন বাড়ি, কমছে বন-জঙ্গল। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের খাবার তৈরিতে চুলায় উনুন জ্বালানো এখন বড় সংকট দেখা দিয়েছে। নিত্যপণ্যের বাজারে জ্বালানি সংগ্রহ নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন তারা।

স্কুলের ফাঁকে মাকে সহযোগিতা করতে খড়কুটা কুড়াচ্ছে স্কুলগামী ছাত্রছাত্রীরা। জ্বালানি সংকট পূরণে এ দৃশ্য দেখা যায় শুক্রবার ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের গুজিখাঁ বিলে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, এ খড় শুকিয়ে তাদের জন্য রান্না-বান্না করে তাদের মা।

খড়কুটা কুড়ানোর সময় যুগান্তরের গৌরীপুর প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয় গুজিখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুস সামাদ, ১ম শ্রেণির আব্দুর রশিদ, ৫ম শ্রেণির নাঈম মিয়া, রুকসানা আক্তার, ১ম শ্রেণির সুমাইয়া আক্তার, ৫ম শ্রেণির শারমিন আক্তার ও টেকনিক্যাল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির আব্দুর রহমানের।

শারমিন আক্তার জানায়, নতুন বছরের সুন্দর বই পেয়েছে। স্কুল তার খুব ভালো লাগে। এখন লেখাপড়া নাই, তাই বন (খড়) কাটি।

গুজিখাঁ গ্রামের আব্দুল আলী জানান, নিত্যপণ্যের সঙ্গে জ্বালানির মূল্য বেড়েছে। গ্রামের ৯৫ শতাংশ মানুষ লাকড়ি ব্যবহার করে। বাড়ির চারপাশের গাছপালা থেকে পাতা আর লাকড়ি হতো সারা বছরের। এখন লাকড়ি নাই।

তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে নওয়াগাঁও গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক জানান, কিছুদিন কয়েল লাকড়ি ব্যবহার করেছি। এখন কয়েল লাকড়ি প্রতি মণ ৬৫০ টাকা। কাঠ লাকড়ির দামও দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।

রিকশাচালক ফজলুল হক বলেন, সারা দিনে যা পাই তা দিয়ে ৪ জনের সংসারে আহার জোগাড়ই কষ্টকর। লাকড়ি কেনার সামর্থ্য থাকে না।

অপরদিকে পৌর শহরের সতিশা গ্রামের বেগম জানান, চাল-ডালের চেয়ে লাকড়ি এখন বড় সংকট। সারা বছর গাছপালা পাতা কুড়াই। শীতের সময় শুকিয়ে বস্তা ভরি, বর্ষাকালের জন্য।

তিনি জানান, আগে খেতে হাঁটুউচা ধানের খড় পড়ে থাকত। এখন শুধু মুরা (৬ ইঞ্চি-৫ ইঞ্চি উচ্চতার খড়)। এই মুরা কাটলেও সারাদিনে বস্তা ভরা যায় না। মেশিন দিয়া আগা-গোড়া কেটে নিয়ে যায়।

ভ্যানচালক সুরুজ আলী জানান, শুধু বাচ্চা না; বাচ্চার মাও এখন লাকড়ি সংগ্রহ করতে যেতে হয়। না হলে চুলায় আগুন ধরানো ব্যবস্থা নেই।

তাঁতকুড়া গ্রামের মজিবুর রহমান জানান, গ্রামের প্রত্যেকটি বাড়ির চারপাশে গাছপালা থাকত, এখন মানুষ থাকার জায়গা নাই, গাছপালাও নাই। তাই এ সংকট আগামী দিনে আরও বাড়বে।

মুদি দোকানি আরশেদ আলী জানান, কাঠ লাকড়ি ছেড়ে, কয়েল লাকড়ি আনতাম। এখন কয়েল লাকড়ির দামও বেড়ে গেছে।

গ্যাসের খুচরা বিক্রেতা মোনায়েম খান জানান, গ্যাসের দামও বেড়েছে, গরিব মানুষদের জন্য কেনা কষ্টসাধ্য।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম