শেরপুর জেলা বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শেরপুর জেলা বিএনপির নামে কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দলের গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিএনপির দলীয় প্যাডে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়- ২ জানুয়ারি ২০২৫, দলের গৃহীত এক সিদ্ধান্ত বলে শেরপুর জেলা বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শেরপুর জেলা বিএনপির নামে কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো যাবে না।

এর আগে ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর (সোমবার) বিকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিন সদস্যবিশিষ্ট জেলা বিএনপির নতুন আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ওই কমিটিতে আহবায়ক করা হয় বিলুপ্ত জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী, যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল আওয়াল চৌধুরী ও সদস্য সচিব করা হয় অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলামকে।

২ জানুয়ারির ঘোষণা অনুযায়ী এ কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। ফলে আংশিক গঠিত ওই আহবায়ক কমিটি ২ মাসও পার করতে পারল না। পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি ঘোষণার পরিবর্তে আংশিক কমিটি স্থগিত ঘোষণা করায় জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম হয়েছে বলে জেলা বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।

এদিকে তিনবারের এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেল আংশিক আহবায়ক কমিটিতে না থাকায় বিএনপির একাংশে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। আবার ওই আংশিক আহবায়ক কমিটি স্থগিত হওয়ায় মাহমুদুল হক রুবেল অনুসারীদের মাঝে আনন্দ উল্লাস শুরু হয়।

রাতেই রুবেল অনুসারী বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী শহরের বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণসহ আনন্দ মিছিল করেন। জেলা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাতভর নেতাকর্মীরা এসে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার জন্য ভিড় করেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রুবেলের গৃদানারায়ণপুরের বাসায়।

একই সঙ্গে রুবেলের নির্বাচনী এলাকা শেরপুর-৩ আসনের  শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা থেকে মোটরসাইকেলযোগে নেতাকর্মীরা শোভাযাত্রা করে জেলা শহরের গৃদানারায়ণপুরে বিএনপির সাবেক সভাপতি রুবেলের বাসায় এসে তাকে শুভেচ্ছা জানান।

এ সময় মাহমুদুল হক রুবেল উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা বিগত দুই মাস তিন সদস্যবিশিষ্ট আংশিক আহবায়ক কমিটি নিয়ে কোনো সমালোচনা না করে যেভাবে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলাম ঠিক সেভাবেই আমরা এখনো থাকব। যেহেতু কেন্দ্রীয় নির্দেশ অনুযায়ী আহ্বায়ক কমিটি স্থগিতের সঙ্গে সঙ্গে কোনো দলীয় কার্যক্রম করা যাবে না, তাই পরবর্তীতে দলীয় সিদ্ধান্তের পর আমরা আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করব।

এদিকে দুই মাসের মাথায় শেরপুর জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি স্থগিত হওয়ার কারণে শহরজুড়ে নানান ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। শুক্রবার সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন চায়ের দোকানে সাধারণ মানুষের মাঝেও বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি স্থগিতকে কেন্দ্র করে সরব আলোচনা চলছে।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সদ্য সাবেক আহবায়ক মো. হযরত আলী বলেন, আহবায়ক কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। বিলুপ্ত করা হয়নি। দল যেটা ভালো মনে করেছে সেটাই করেছে। এতে আমার কোনো বক্তব্য নাই।