সালিশে ‘মিথ্যা অপবাদ’ সইতে না পেরে কিশোরীর আত্মহত্যা
শিবচর(মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
মাদারীপুর জেলার শিবচরে হাফিজা আক্তার (১৪) নামে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় সালিশে মিথ্যা বিচারের অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আত্মহনন পথ বেছে নেন এই কিশোরী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী কাইমুদ্দিন শিকদার কান্দি এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে একই এলাকার আবু কালাম সরদারের ছেলে পেয়ার হোসেন জোরপূর্বক হাফিজার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন হাফিজা। পরে পেয়ার হোসেন তাকে ভয় দেখিয়ে এবং চাপে ফেলে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে গর্ভপাত করান। সাম্প্রতিক সময়ে পেয়ার হোসেন আবারও হাফিজাকে বিরক্ত করতে শুরু করেন। প্রায়ই তার ঘরে ঢুকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করতেন।
এ নিয়ে হাফিজার পরিবার স্থানীয় সালিশিদের কাছে বিচার চায়। সালিশিদের বিচার ছিল পক্ষপাতমূলক। অভিযোগের প্রাথমিক লক্ষ্য পেয়ার হোসেন হলেও সালিশে অভিযুক্ত করা হয় তার ছোট ভাই আলী হোসেনকে। এতে হাফিজা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
গতকাল রাতে বাড়ির লোকজন পাশের একটি পিকনিকে ব্যস্ত থাকার সময় হাফিজা ঘরের সিলিংয়ের কাঠে রশি ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেন। দরজা জানালা বন্ধ দেখে তার বড় ভাই জানালা ভেঙে ঢুকে হাফিজার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। স্থানীয়রা এসে মেয়েটিকে নামানো আগেই তিনি মারা যান।
হাফিজার বড় ভাই নাসির মোল্লা বলেন, ‘মিথ্যা সালিশের কারণেই আমার বোন মারা গেছে। যদি সালিশটি সঠিকভাবে হত, তাহলে সে আজ বেঁচে থাকত। আমি আমার বোনের মৃত্যুর ন্যায়বিচার চাই।
মেয়েটির মৃত্যুর পর পেয়ার হোসেনের পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছেন। সালিশি কমিটির অন্যতম ব্যক্তি ও ওয়ার্ড মেম্বার মোতাহার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোকতার হোসেন বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’