বিএমডিএর কার্যালয়ে বিএনপি নেতাদের হামলা-তালার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম
আমরা তানোরের মাটি ও মানুষ শান্তিতে থাকতে চাই; কিন্তু একটি গোষ্ঠী-মহল শান্তিতে থাকতে দিতে চায় না। আমরা অন্যায় করব না, কেউ করলেও সইব না। বরেন্দ্রর ডিপ অপারেটরকে কেন্দ্র করে অফিসের জনবলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও তালা দিয়ে হামলা করে যারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে তারা মহা অন্যায় করেছেন। এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্রশাসনকে জড়িতদের গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি।
বুধবার বিএমডিএ রাজশাহীর তানোর কার্যালয়ে বিএনপি নেতাদের তালা ও জনবলকে অকথ্য নগ্নভাষায় গালিগালাজ, অনিয়ম দখলবাজি আর সেচচার্জ বৃদ্ধির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা সদরে কৃষক সমাজ আয়োজনে রাজশাহী জেলার ওলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা মো. সিরাজুল ইসলাম তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের নেতারা ও বিএমডিএর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে বৈঠক করা হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
এ সময় সমাবেশে বক্তব্য দেন- জামায়াতে ইসলামীর তানোর উপজেলা শাখার আমির মাওলানা মো. আলমগীর হোসেন, নায়েবে আমির মাওলানা মো. আনিসুর রহমান, সেক্রেটারি ডিএম আক্কাছ আলী, ওলামা বিভাগের তানোর উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা কাজী মিজানুর রহমান, তানোর উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মো. আফজাল হোসেন, সেক্রেটারি মো. জাকারিয়া হোসেন, তানোর উপজেলার রিকশা-ভ্যান কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান মিজান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের তানোর পৌর শাখার সভাপতি মো. আজাহার আলী সরদার, মুণ্ডুমালা পৌর শাখার সভাপতি মো. আব্দুস শুকুর ও সরনজাই ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মো. রফিকুল ইসলামসহ জামায়াতের নেতারা।
এর আগে এক বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগে দলীয় নেতাকর্মীদের নাম না আসায় রাজশাহীর তানোর বিএমডিএ কার্যালয় ভাঙচুর করে তালা দেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তানোর উপজেলা বিএনপির তিন নেতার নেতৃত্বে ঘটনাটি ঘটে। ওই দিন বিকালে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে তালা খুলে দেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত ব্যাপারে গত বুধবার দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়।
খবরের সূত্র ধরে জানা যায়, বিএমডিএ তানোর জোনাল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর বিএমডিএর অধিকাংশ গভীর নলকূপের আগের অপারেটরদের তাড়িয়ে দিয়ে দখল করেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। ফলে রাজশাহী অঞ্চলজুড়ে মৌসুমের সেচ কর্মসূচিতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।
তানোরের ৫২৯টি গভীর নলকূপের মধ্যে বর্তমানে সচল ৫১৬টি। এসব নলকূপের অপারেটর পদে আবেদন পড়ে ১ হাজার ৬৯৪টি।
মঙ্গলবার অপারেটর নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। কিছু বিএনপি নেতার সুপারিশ করা অধিকাংশ প্রার্থী বাদ পড়েন। স্থানীয় সেসব বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে আগেই নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে।
এ ব্যাপারে বিএমডিএর তানোর জোনাল অফিসের সহকারী প্রকৌশলী জামিলুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাদের কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ বোর্ড অপারেটর নিয়োগ সম্পূর্ণ করেছে। বিএনপির যেসব নেতা অভিযোগ করেছেন, ওই অভিযোগের সূত্র ধরে কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান এই প্রকৌশলী।