থোকায় থোকায় ঝুলছে হলুদ রংয়ের কমলা, আলেপের মুখে হাসি
তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩১ পিএম
প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে হলুদ রংয়ের কমলা লেবু। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিয়ে বের হওয়া কমলার এমন দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায় যে কারও। কমলার এমন বাগান করে সফল হয়েছেন উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর সাংবাদিকপাড়া গ্রামের আলেপ উদ্দিন। তার বাগানের গাছে ধরা চায়নিজ জাতের কমলা খেতে বেশ সুস্বাদু ও সুমিষ্ট। যেটি স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
আলেপ উদ্দিনের কমলা বাগানের প্রবেশমুখে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে প্রতি থোকায় অন্তত ৩০ থেকে ৪০টি কমলা ঝুলে আছে। যেখানে রয়েছে ১০ ফুট উচ্চতার ৯০টি কমলা গাছ। এক গাছ থেকে আরেক গাছের দূরত্ব প্রায় ৫ ফুট। ৩০ শতাংশ জমিতে সারিবদ্ধভাবে লাগানো গাছগুলোর প্রতিটি শাখায় ঝুলে রয়েছে অসংখ্য কমলা। কিছু পেকে যাওয়ায় হলুদ রঙ ধারণ করেছে। কিছু কমলা কাঁচা থাকায় সবুজ রংয়ের হয়ে আছে।
নিয়মিত বাগানের পরিচর্যায় রয়েছেন মালিক আলেপ উদ্দিন। তিনি বলেন, বাবার রেখে যাওয়া পৈতৃক জমিগুলো তিনি সুপারি গাছ ও দেশীয় বিভিন্ন জাতের আম, কাঁঠাল, জলপাই, লেবু, সজনে গাছ, আমড়া, বড়ই, জাম, লিচু গাছ লাগিয়েছেন। এছাড়া তিনি প্রতি বছর বাঁধা কপি, ফুল কপি, আলু ও বেগুন চাষ করেন।
২০২১ সালে আলেপ উদ্দিন তার বাড়ির সামনেই উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ এবং ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় পৈতৃক ৩০ শতাংশ জমিতে ৯০টি চাইনিজ জাতের কমলা রোপণ করেন। কমলার চাষ করে ২০২৩ সালে ২০ হাজার এবং ২০২৪ সালে ২ লাখ ৮ হাজার টাকা আয় করেন। চলতি বছরে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করেছেন।
আলেপ উদ্দিন জানান, চলতি বছরে উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ৬০ শতক জমিতে ২০০টি কমলার চারা লাগিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএএও আবু সায়েম হাসান জানান, প্রথমদিকে কৃষকেরা কমলা চাষে অনীহা প্রকাশ করত। তাদের ধারণা ছিল, চাষ করলে সফলতা আসবে না। এছাড়া কমলা টক হলে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন না। তবে আলেপ উদ্দিনের সফলতা দেখে কমলার বাগান করতে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীবা রানী রায় বলেন, উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে ৩০টি কমলার, ৩৫ হেক্টর জমিতে ১৬০টি মালটার এবং ৭ হেক্টর জমিতে লেবুর বাগান প্রদর্শনী হিসেবে রয়েছে; যা উপজেলা কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে। উপজেলায় উৎপাদিত কমলা ও মালটা খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু।