লিবিয়ার কারাগারে নির্যাতনে বাংলাদেশির মৃত্যুর অভিযোগ
কালকিনি-ডাসার (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৬ পিএম
দালালের খপ্পরে পড়ে উন্নত জীবনের আশায় ইতালিতে পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন আসাদ মাতুব্বর (৪০)। তবে দীর্ঘ দুই বছর লিবিয়ার অন্ধকার কারাগারে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়ে অবশেষে গত ৩১ ডিসেম্বর মারা গেছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে।
নিহত আসাদ মাতুব্বর মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম কমলাপুর গ্রামের বাসিন্দা আ. হামিক মাতুব্বরের ছেলে। তার মৃত্যুর খবরে নিহতের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে যান তার বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহতের পরিবার সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী আসাদ মাতুব্বরের ভাই মাসুদ মাতুব্বর ও ছেলে আবির মাতুব্ব বলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝী ইউনিয়নে ঝিকরগাটি গ্রামের মঙ্গল খানের ছেলে রুবেল খান অল্প টাকার বিনিময় লিবিয়া হয়ে অবৈধভাবে সাগর পথে ইতালি লোক পাঠান। এ কথা জেনে ওই দালাল রুবেল খানের প্রলোভনে সাড়া দিয়ে অবৈধ পথে ইতালি যেতে রাজি হন আসাদ মাতুব্বর।
ইতালি যেতে প্রত্যেক লোককে ৮ লাখ করে টাকা দিতে হয় রুবেল খানকে। আসাদ মাতুব্বরকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে দুই বছর আগে লিবিয়া নিয়ে যায় দালাল রুবেল খান।
তবে লিবিয়া পৌঁছানোর পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় অন্ধকার কারাগারে। সেখানে বসে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করে ভিডিও কলে আসাদের পরিবারকে টাকা পাঠাতে বলতো দালাল রুবেল। এ পর্যন্ত আসাদ মাতুব্বরের পরিবারের কাছ থেকে মোট ৪৩ লাখ টাকা নেয় রুবেল। হঠাৎ গত ৩১ ডিসেম্বর লিবিয়ার দালাল রুবেল ফোন দিয়ে বলে আসাদ মাতুব্বর মারা গেছে। আমরা লাশ কবর দিয়ে দিছি।
নিহতের ছেলে আবির বলেন, আমার বাবা আসাদ মাতুব্বরের লাশ ফেরত চাই। সেই সঙ্গে দালাল রুবেলের ফাঁসির দাবিও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রুবেল খানকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি এবং তার বাড়ি তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আসাদের মৃত্যুর খবরে আমাদের পুরো এলাকা নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। আমরা দালাল রুবেলের বিচার চাই।
মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সজিব বলেন, আসাদের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, এ ঘটনা পুনরায় যাতে না ঘটে সেই বিষয়ে জেলা প্রশাসক কাজ করছে।