Logo
Logo
×

সারাদেশ

পাথরঘাটার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

Icon

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:২৭ এএম

পাথরঘাটার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

বরগুনা জেলার পাথরঘাটায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূত নিয়োগ, সনদ জাল, একই ব্যক্তি দুই পদ থেকে বেতন উত্তোলন, বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, ছেলের জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির পদ ভাগিয়ে নেওয়া, স্ত্রীকে দাতা সদস্য, তিনজনের নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। 

কে কে আজিজিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম গোলাম হায়দারের বিরুদ্ধে সম্প্রতি একই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী রেজাউল হক এ অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, কে কে আজিজিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে আ. জব্বার থাকাকালীন ওই পদ শূন্য না হলেও ২০১২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন এবং নিয়োগ বাছাই দেখানো হয় একই বছরের ২৪ মার্চ। বর্তমান প্রধান শিক্ষক এসএম গোলাম হায়দার ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল যোগদান করেন। এর আগে তিনি একই বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক ছিলেন। ২০১৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত গোলাম হায়দার দুই পদের বেতন উত্তোলনসহ সব সুযোগ সুবিধা নেন। এছাড়া প্রধান শিক্ষক হতে শিক্ষাগত যোগ্যতা সর্বোচ্চ বিএ ও বিএডের সনদ জালের অভিযোগ রয়েছে। 

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী সাইকুল ইসলামকে অষ্টম শ্রেণির সনদ জাল দিয়ে নিয়োগ, সহকারী শিক্ষক (সমাজ বিজ্ঞান) মহসীনা আক্তার, সহকারী শিক্ষক মাছুম বিল্লাহ (লাইব্রেরিয়ান) ও সহকারী শিক্ষক প্রনতী শিকদারকে (ব্যবসায় শিক্ষা) অবৈধভাবে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন গোলাম হায়দার। বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. রেজাউলের অভিযোগের ভিত্তিতে পাথরঘাটা উপজেলা আইসিটি অফিসারের তদন্তে সত্যতা মিলেছে। 

গোলাম হায়দার নামে একই ব্যক্তি একই সময়ে দুই পদের বেতন তোলেন। ২০১২ সালের ১ মে বাছাই বোর্ডের সুপারিশ রেজুলেশনে দুজন ও পরবর্তীতে একই তারিখের একটি রেজুলেশনে তিনজনের সুপারিশ পাওয়া যায়। যেখানে প্রধান শিক্ষকের হাতের লেখা রয়েছে বলে ওই তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে তদন্ত কর্মকর্তা বিদ্যালয়ের কার্যক্রমের স্বচ্ছতার জন্য নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠন, বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতার জন্য নিরীক্ষা কমিটি গঠন এবং নিয়োগ কার্যক্রমে অনিয়মের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশও করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান।

সহকারী শিক্ষক সজল বেপারি বলেন, অভিযোগ তো অনেক আগে থেকেই। আমি ২০১৭ সালে যোগদানের পর প্রতিষ্ঠান থেকে যে সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা তা পাচ্ছি না। তবে অভিযোগের সত্যতা আছে বলেই এতোটা আসছে।

বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী রেজাউল হক বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় নিজের দোষ ঢাকতে উল্টো আমাকে অহেতুক হয়রানি করে এবং চাকরি থেকে একবার বরখাস্ত করেন। ইউএনওর পেশকার মঞ্জুর সহযোগিতায় ইউএনওকে ভুল বুঝিয়ে আমার বিল বন্ধ করে রাখে। অথচ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে আমাকে বিল প্রদানের অনুমতি দিলেও বিল দেননি।

প্রধান শিক্ষক গোলাম হায়দার বলেন, রেজাউল অফিস সহকারী থেকে শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার সনদ জালের কারণে নিয়োগ দেওয়া যায়নি। যার জন্য আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। নিজের সনদ জালের বিষয় জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকনুজ্জামান খান বলেন, রেজাউলের বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষককে নোটিশ দেওয়া হয়েছে যে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেক। সব তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম