ফিরে দেখা ২০২৪
চুনারুঘাটে বছরের শুরুতে উত্থান, শেষে পতন ব্যারিস্টার সুমনের!

আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ)
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ পিএম
-67742b64a5bba.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
দেশে-বিদেশে আলোচিত সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন চুনারুঘাট মাধবপুর উপজেলা। জনপ্রিয়তায় তখন তিনি ছিলেন শীর্ষে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক বিষয়ে পোস্ট ও লাইভ করে এবং এলাকার উন্নয়নে দীর্ঘ সময় আলোচনায় থাকার পর ৫ আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বেকায়দায় পড়েন। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মামলা হলে তিনি গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কাশিমপুর জেল-হাজতে রয়েছেন।
ব্যারিস্টার সুমন আইন পেশার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে আলোচনায় আসেন। পরবর্তীতে এলাকায় উন্নয়নে তিনি নিজ অর্থায়নে ছোট ছোট ৫০টির বেশি ব্রিজ, কালভার্ট ও রাস্তা করে জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েও না পেয়ে স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেন। এ নির্বাচনে তিনি সাবেক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে ১ লাখ ৬৯ হাজার বেশি ভোটে হারিয়ে বিজয়ী হয়ে আলোড়ন তোলেন।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হয়েও তিনি সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা রাখেন। সরকার ও তার মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নানা বক্তব্য রেখে আলোচনা-সমালোচনায় ছিলেন। ব্যারিস্টার সুমন চলতি বছরের শুরুর দিকে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ‘অবৈধ সম্পদ’ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করে আলোচিত হন।
জুলাই মাসের প্রথম দিকে ব্যারিস্টার সুমনকে হত্যার হুমকির ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনা চলে। হুমকির প্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। পরে সোহাগ নামে এক হুমকিদাতাকে পুলিশ গ্রেফতার করলে জানতে পারে, ব্যরিস্টার সুমনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেই হুমকিদাতা গল্প সাজিয়েছিল।
চুনারুঘাট মাধবপুর উপজেলাকে পর্যটন নগরী করার ঘোষণা দিয়ে কাজ শুরু করেন। চুনারুঘাট পৌর এলাকার মরা খোয়াই নদীর পরিষ্কার করে দেশ-বিদেশে প্রশংসা কুড়ান। নিজের এলাকাকে সারা দেশে পরিচিত করতে কাজ শুরু করেন। এতকিছুর পরও স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের সঙ্গে তার ছিল দূরত্ব। কিন্তু কেন্দ্রীয়ভাবে তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষেই কাজ করতেন।
কোটা আন্দোলন শুরু হলে তিনি প্রথমে নীরব থাকলেও পরে কোটা আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ৫ আগস্টের আগে তিনি টানা কয়েকদিন সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনের বিপক্ষে বক্তব্য রাখেন এবং আলোচনা সমালোচনায় পড়েন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এরমধ্যে তার বিরুদ্ধে হবিগঞ্জে ও ঢাকায় একাধিক হত্যা মামলা দায়ের হয়। তখনও তিনি পুনরায় বক্তব্য দিয়ে ছাত্রদের পক্ষে ছিলেন বলে বুঝানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ২১ অক্টোবর রাতে তিনি মিরপুরের তার বোনের বাসা থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।