প্রতিবেশীর বাসার ওয়ারড্রবে শিশুর লাশ
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২৩ পিএম
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে প্রতিবেশী এক ভাড়াটিয়া হাছান মিয়ার বাসার ওয়ারড্রব থেকে সাহাল (৩) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোররাতে শহরের পঞ্চবটি এলাকার নতুন রাস্তাসংলগ্ন বলাকা স্কুলের পেছনের দিল মোহাম্মদের বাসায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত শিশু ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ এলাকার কাতার প্রবাসী সানাউল্লাহ বাবুর ছেলে। সানাউল্লাহ বাবু পঞ্চবটি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
এ ঘটনায় বাসার অপর ভাড়াটিয়া আশুগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা হাছান মিয়াকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া নিহত শিশুর মা মোমেনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
তবে পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, শিশুর মায়ের সঙ্গে ভাড়াটিয়া যুবকের পরকীয়া সম্পর্কের জেরেই হত্যার ঘটনাটি ঘটতে পারে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার মাগরিবের নামাজের সময় সাহাল তার মায়ের সঙ্গে ছিল। নামাজ শেষে বাসায় বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর তার শিশুসন্তানকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না মা। পরবর্তীতে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে শিশুর সন্ধান না পেয়ে রাতেই থানায় জিডি করেন শিশুর মা।
অভিযোগ পাওয়ার পর ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে নিখোঁজ শিশুর সন্ধান করতে যায়। তারপর প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া হাছান মিয়ার রুমের তালা ভেঙে রুম তল্লাশি করে বাসায় থাকা ওয়ারড্রবের ভিতরে মুখে স্কচটেপ পেঁচানো অবস্থায় সাহালের লাশ পাওয়া যায়।
শিশুর খালা রহিমা বেগম বলেন, মাগরিবের নামাজের সময় তার মায়ের সঙ্গে ছিল শিশু সাহাল। নামাজের পর বিদ্যুৎ চলে যায়। তারপর থেকে আমার বোনের একমাত্র ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
বাসার মালিক দিল মোহাম্মদের স্ত্রী রাশেদা বেগম বলেন, সোমবার রাত ১১টার দিকে আমার বাসার ভাড়াটিয়া হাছান মিয়া ফোন করে আমাকে জানান সন্ধ্যার পর থেকে মোমেনা বেগমের ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছে না। পরবর্তীতে জানতে পারি হাছানের বাসায় শিশুর মরদেহ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিন মিয়া বলেন, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পেয়ে আমরা রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে কিছু আলামতের ভিত্তিতে পাশের ভাড়াটিয়া হাছানকে সন্দেহ হয়। পরে তাকে ফোন করা হলেও তিনি উপস্থিত হননি। এরপর তার রুমের তালা ভেঙে তল্লাশি করে ওয়ারড্রবের ভিতর শিশুটিকে মৃত অবস্থায় পায় পুলিশ। এ সময় শিশুর মুখে স্কচটেপ লাগানো ছিল।
তিনি বলেন, সোমবার রাতেই কৌশলে ভাড়াটিয়া হাছানসহ শিশুর মাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদে শিশুকে হত্যার কথা স্বীকার করে হাছান মিয়া। শিশুটির মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার পেছনে দুজনের পরকীয়া রয়েছে কিনা তা তদন্ত করছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, হাছানকে গ্রেফতার দেখানো হলেও মাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কিশোরগঞ্জ পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।