আ.লীগের প্রভাবে লুটপাট, এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব
জাফর আহমেদ, টাঙ্গাইল
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৬ এএম
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সাবেক চেয়ারম্যান হত্যাসহ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর নতুন আরও একাধিক মামলা হয়েছে।
আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অনাস্থা দেন ইউপি সদস্যরা। তার বিচারের দাবিতে ইতিপূর্বে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও ঝাড়ু মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয়রা। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু সাঈদসহ একাধিক ইউপি সদস্য জানান, আফজাল হোসেন ২২ সালের ২৭ জুলাই আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর পরিষদের সামনে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশের সড়কটি ৫০ মিটার ইটের সলিংয়ের কাজে এডিপি তিন লাখ ও উন্নয়ন সহায়তা প্রকল্প হতে চার লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। তবে কোনো কাজ করেননি। আলিসাকান্দা হবি দোকানদারের বাড়ি থেকে ইদ্রিসের বাড়ি পর্যন্ত ১০০ মিটার সড়কে তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও তা তিনি বাস্তবায়ন করেননি।
পাঁচকাহনিয়া এলাকার সেতুর উভয় সংযোগ সড়কটি ঠিকাদার বাস্তবায়ন করলেও সেখানে উন্নয়ন সহায়তা থেকে চার লাখ টাকা বরাদ্দ দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। পরিষদ আঙ্গিনায় শেখ মুজিবুরের ম্যুরালের নামে পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। দাইন্যা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সম্মেলনে পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এরপর তিনি ১৫ থেকে ২০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন না করেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার আসার পর আফজাল হোসেন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও নানাভাবে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। ভূমি দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কাজসহ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। সেই বাহিনী দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। তার অন্য কোনো পেশা না থাকলেও চড়েছেন প্রায় ৪০ লাখ টাকা দামের গাড়িতে। গত ৫ আগস্ট বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সেই গাড়িতে আগুন দেয়।
২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ফারুককে শহরের আকুরটাকুর পাড়া এলাকায় হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। সেই মামলায় দাইন্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আফজাল হোসেনকে আসামি করা হয়। এবিষয়ে চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দেওয়া হয়েছে। আমি আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে কোনো প্রভাব খাটিয়ে চেয়ারম্যান হয়নি। এছাড়াও কোনো প্রকল্প লুটপাট করিনি।