হাওড়াঞ্চলে বোরো আবাদের ধুম, শ্রমিক সংকটে উদ্বিগ্ন কৃষক
মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম
ধানের চারা রোপন করতে নিয়ে যাচ্ছেন কৃষক শ্রমিকরা
নেত্রকোনার মদনে ফসলের মাঠজুড়ে চলছে বোরো আবাদের ধুম। আবাদ কার্যক্রমকে সফল করতে চাষিরা মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে শীতের তীব্রতা কিছুটা বেশি থাকায় তাদের অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে।
শীতে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি সার, বীজ, সেচসহ কৃষি উপকরণের দাম বাড়া এবং শ্রমিক সংকট থাকায় প্রতি কাঠায় (১০ শতাংশ) এবার বাড়তি খরচ গুনতে হবে তাদের। মৌসুমে প্রচণ্ড শীতের কারণে কৃষি শ্রমিক না পাওয়ায় চাষাবাদ নিয়ে অনেকটাই উদ্বিগ্ন কৃষক। আবার শ্রমিক পাওয়া গেলেও গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা বোরো চারা তুলে বস্তায় করে সারিবদ্ধভাবে নিয়ে যাচ্ছেন ফসলের মাঠে, কেউ কেউ নিজেই মই দিয়ে জমি সমতল করছেন, সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে চারা রোপণ করছেন।
অনেকে আবার জমিতে চারা রোপণের জন্য হালচাষ করে জমি প্রস্তুত করছেন। এসব ফসলি জমিতে চলছে গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচের কাজ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১৭ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। হাওড়বেষ্টিত এ উপজেলায় ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে বোরো আবাদ কার্যক্রম, যা চলবে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত; কিন্তু শ্রমিক সংকট থাকায় এবার সময়মতো বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
বাঘমারা গ্রামের কৃষক জানু মিয়া, ফতেপুর গ্রামের কৃষক সবল মিয়া, ফরিদ চৌধুরী, দেওশহিলা গ্রামের সামিউর, নাছিরসহ একাধিক কৃষক জানান, প্রতি বছর ফসল উৎপাদনের সময় ধানের দাম কমে যায়। এতে উৎপাদন খরচ উঠাতেই তাদের হিমশিম খেতে হয়। ফলে তাদের ঋণের বোঝা বাড়ছে। এখন আবার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, গত বছর যেখানে ছিল ৫শ থেকে ৬শ টাকা এখন দিতে হচ্ছে ৮শ থেকে এক হাজার টাকা। এরপরও সময়মতো পাওয়া যাচ্ছে না। ভরা মৌসুমে শীতের কারণে চাষাবাদ করতে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া বিদ্যুতের দাম বাড়ায় প্রতি একর জমিতে সেচের খরচও বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, শীতে বোরো বীজতলা রক্ষার পাশাপাশি বোরোর আবাদ সফল করতে উপজেলায় ২ হাজার ৫০০ কৃষককে প্রণোদনার আওতায় সার-বীজ দেওয়া হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১৭ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সময়মতো কৃষকরা বোরো আবাদ করতে পারলে ফসল ভালো হবে।