Logo
Logo
×

সারাদেশ

চোরাচালান-সরকারি কাজে বাধা, ইউপি সদস্যসহ ৫ জনের নামে মামলা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, তাহিরপুর

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪০ এএম

চোরাচালান-সরকারি কাজে বাধা, ইউপি সদস্যসহ ৫ জনের নামে মামলা

ভারতীয় জ্বালানি কয়লা এনে বিক্রি করা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের এক ইউপি সদস্যসহ পাঁচ কয়লা চোরাকারবারির নামে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানায় মামলা করেছে বিজিবি।

২৮-বিজিবির তাহিরপুরের টেকেরঘাট কোম্পানি হেডকোয়ার্টারের হাবিলদার যতীন্দ্র মোহন সিংহ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ এনে ওই পাঁচজনকে পলাতক আসামি দেখিয়ে বৃহস্পতিবার মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের সীমান্ত গ্রাম রজনী লাইনের রেনু মিয়ার ছেলে ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল, একই গ্রামের মৃত সোবাহানের ছেলে মতি মিয়া, তার ছেলে মোরশেদ আলম, খোরশেদ আলম, উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত গ্রাম পুটিয়ার জলিল মিয়া ছেলে (মতি মিয়ার জামাতা) শফিকুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে পলাতক আসামিদের হেফাজত থেকে ১টি রেজিস্ট্রেশনবিহীন ভারতীয় চোরাই মোটরসাইকেল ও শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসা ১৫০ কেজি কয়লা জব্দ দেখানো হয়েছে। জব্দ মূল্য প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার টাকা।

শুক্রবার বিজিবি, মামলার এজাহার ও স্থানীয় সীমান্ত গ্রামের মানুষজন সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে তাহিরপুরের চাঁনপুর-টেকেরঘাট বিজিবির বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্তের ওপার ভারত থেকে একাধিক সংঘবদ্ধ চক্র শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারতে থেকে চোরাচালানের কয়লার বস্তা এপারে নিয়ে আসে। এর পর মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, পিকআপ, লরিতে পরিবহন করে নিরাপদে বিক্রির জন্য পার্শ্ববর্তী বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের কিছু অসাধু কয়লা আমদানিকারকের ডিপোতে মজুদ করে রাখে।

পরে এলসিকৃত কয়লার সঙ্গে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসা কয়লাগুলো মিনিপাস, সমিতির টোকেন, বিল অফ এন্ট্রির ফটোকপি দিয়ে নির্বিঘ্নে আমদানিকৃত কয়লা হিসাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছে। বিজিবির টহলদল সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ওইসব চোরাচালানের কয়লা, পরিবহণে থাকা মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, পিকআপ, ট্রাক জব্দ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় সংঘবদ্ধ চোরাকারবারিদের দ্বারা, হুমকি, হামলা ও সরকারিকাজে বাঁধার সম্মুখীন হন।

এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার টেকেরঘাট কোম্পানি হেডকোয়ার্টারের বিজিবি নিয়ন্ত্রিত সীমান্ত এলাকার সড়কপথ ব্যবহার করে মোটরসাইকেলযোগে চোরাচালানের কয়লার বস্তা বড়ছড়া শুল্ক স্টেশনে নিয়ে আসার পথে বিজিবি টহল দল জব্দ করে। এরপর অভিযুক্ত চোরাকারবারিরা সংঘবদ্ধ হয়ে জব্দকৃত কয়লা, চোরাই মোটরসাইকেল জোরপূর্বক বিজিবির হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিতে হুমকিসহ সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান করে।

সীমান্তের চোরাকারবারিদের লাইনম্যান

অভিযোগ রয়েছে উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের রজনীলাইন গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য নাসিরের ছেলে হারুন ওরফে ট্যাবলেট হারুন, চাঁনপুরের আব্দুর রহমানের ছেলে জহুর, উত্তর শ্রীপুরের বড়ছড়ার মৃত ফরিদ মিয়ার ছেলে আক্কল আলী ওরফে সোর্স আক্কইল্যা, পার্শ্ববর্তী বুরুঙ্গাছড়ার একরাম উল্লাহর ছেলে মাহমুদ আলীসহ বেশ কয়েকজন কয়লাসহ ভারতীয় কসমেটিকস, মসলা, ফলমুল, গবাদিপশু, বিদেশি মদ, ইয়াবা, গাঁজা নিরাপদে সীমান্ত থেকে সরিয়ে নিতে কাজ করে। তারা থানা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাম ভাঙ্গিয়ে তাদেরকে ম্যানেজ করার কথা বলে নিয়মিত সীমান্ত চোরাচালানে সহযোগিতা ও চাঁদাবাজি করে আসছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় জানতে চাইলে রজনীলাইন গ্রামের হারুন তার বিরুদ্ধে আসা সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেন।

একই দিন সন্ধ্যায় আক্কল আলী, মাহমুদ আলী, জহুর মিয়ার মোবাইল ফোনে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে দ্রুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় তাহিরপুর থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে বিজিবি কর্তৃক মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসামিরা পলাতক রয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম