বহুল আলোচিত হারিছ ঢাকায় নয়, শায়িত হবেন সিলেটে
সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৮ পিএম
বহুল আলোচিত প্রয়াত রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হারিছ চৌধুরীর জানাজা রোববার সিলেটে অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ২টায় সিলেট নগরীর ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহ ময়দানে তার জানাজা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
এরপর লাশ কানাইঘাট
উপজেলায় প্রয়াত হারিছ চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত ‘শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানার' আঙিনায়
নির্ধারিত স্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী
বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারিছ চৌধুরীর লাশ জানাজা ও দাফনের
আগে ঢাকা মেডিকেল মর্গ থেকে সিলেট নেওয়া হবে। হারিছ চৌধুরীর কন্যা ব্যারিস্টার সামিরা
তানজিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সামিরা চৌধুরী
জানান, ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর হারিস চৌধুরী মৃত্যুবরণ করলে ওই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের
রোষানল ও নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে তার পরিচয় গোপন করে অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান নামে
সাভারের বিরুলিয়ায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যিন মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে তাকে দাফন করা হয়।
পরবর্তীতে কন্যা
সামিরার এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে
লাশ উত্তোলন করা হয়। কবর থেকে লাশ তোলার পর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিআইডি নমুনা সংগ্রহ
করে এবং লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়। পরবর্তীতে ডিএনএ টেস্টে লাশটি
হারিছ চৌধুরীর নিশ্চিত হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে তার লাশ সিলেটে দাফন করার ব্যবস্থা
নেওয়া হয়।
এর আগে গত ২০
ডিসেম্বর কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা নাসরীনের উপস্থিতিতে প্রয়াত আবুল হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার
সামিরা তানজিম চৌধুরী ও আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতিতে সিলেটের কানাইঘাটে কবরের স্থান
নির্ধারণ করা হয়। কবরের জন্য শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানা প্রাঙ্গণ নির্ধারণ
করা হয়। নির্ধারিত স্থানটি প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর পিতা শফিকুল হক চৌধুরীর স্মৃতি রক্ষা
ও মানবতার সেবার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হারিছ চৌধুরী নিজেই। এই এতিমখানা প্রাঙ্গণেই
অন্তিম ঠিকানা হচ্ছে হারিছ চৌধুরীর।
কানাইঘাট উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীন জানান,
উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেভাবে
মুক্তিযোদ্ধার সম্মাননায় প্রয়াত কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম হারিছ
চৌধুরীর কবর এতিমখানা প্রাঙ্গণেই হবে।
হারিছ চৌধুরীর
মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা নানাভাবে
অবিচারসহ হয়রানির শিকার হয়েছি। আমার বাবা মারা যাওয়ার পরও সেই সময় সরকারকে জানিয়ে কোনো
প্রতিকার পাইনি। উল্টো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি এবং তার মৃত্যুর বিষয়টি অমীমাংসিত
থেকে যায়। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে বাবার লাশ শনাক্ত করে তার ইচ্ছা অনুযায়ী কানাইঘাটে
দাফন করতে পারব, যার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি।
প্রসঙ্গত, আত্মগোপনে
থাকা অবস্থায় ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বিএনপির সাবেক
কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবুল হারিছ চৌধুরী মারা যান। ৪ সেপ্টেম্বর প্রফেসর মাহমুদুর
রহমান নামে ঢাকার সাভারে একটি মাদ্রাসায় তার লাশ দাফন করা হয়। এরপর আবুল হারিছ চৌধুরীর
মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী প্রফেসর মাহমুদুর রহমানই তার পিতা আবুল হারিছ চৌধুরী
দাবি করে লাশের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালতের নির্দেশে
তার লাশ কবর থেকে তোলা হয়। এরপর ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
একুশ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা ছিল তার বিরুদ্ধে।