পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যুবককে অপহরণের অভিযোগ
সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৮ পিএম
পাবনার সাঁথিয়ায় ইশতিয়াক (২১) নামে এক যুবককে অপহরণ করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশ সদস্য আনিসুর রহমান ও তার স্ত্রী সীমা খাতুনের (৪০) বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের জোড়গাছা গ্রামে।
অপহৃত ইশতিয়াক ওই গ্রামের কামাল হোসেনের একমাত্র পুত্র।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে সাঁথিয়া থানায় নিখোঁজ ইশতিয়াকের মা শামসুন্নাহার বাদী হয়ে সুজানগর থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্য আনিসুর রহমান, তার স্ত্রী সীমা খাতুন (৪০) ও মেয়ে আশার বিরুদ্ধে অপহরণ করে গুম করে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ দেন।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ২১ ডিসেম্বর ইশতিয়াক বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি না ফেরায় তার মা শামসুন্নাহার গত ২২ ডিসেম্বর সাঁথিয়া থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন।
এদিকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানা যায়, আনিসের শাহজাদপুরের বাড়িতে তার হেফাজতে ইশতিয়াক আছেন। জানতে পেরে সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান গত ২৩ ডিসেম্বর আনিসের মাধ্যমে ভিকটিমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন।
এরপর গত ২৪ ডিসেম্বর আনিসুর রহমান ছেলের স্বজনদের জানান, ইশতিয়াক বাড়ি থেকে চলে গেছে বাইরে যাওয়ার কথা বলে। এদিকে গত ৬ দিন ছেলে বাড়ি না ফেরায় তার পরিবার উদ্বিগ্ন উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছে।
তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে ইশতিয়াককে বাথরুমে আটকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে; যা তারা তার ছেলে আনিসের জিম্মায় থাকা অবস্থায় জানতে পারে।
এমতাবস্থায় ছেলেকে সুস্থ ফিরে পেতে তার মা শামসুন্নাহার বুধবার রাতে সাঁথিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। তিনি বলেন, আমি আমার ছেলেকে সুস্থ ফেরত চাই। প্রশাসনের কাছে আমি জোর দাবি জানাই আমার ছেলেকে যারা আটকে রেখে তাকে মারধোর করেছে তাদের শাস্তি চাই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশ সদস্য আনিসুর রহমান সুজানগর থানা থেকে গত ১৮ ডিসেম্বর তারিখে ৮ দিনের ছুটি নেন। এদিকে ইশতিয়াক নিখোঁজ হয় ২১ ডিসেম্বর।
ইশতিয়াকের পরিবার জানান, সে আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করে গুম করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়াও ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে নিখোঁজ ইশতিয়াকের স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়া ঐশি বলেন, আমার স্বামীকে সুজানগর থানার কনস্টেবল আনিসুর রহমান আটকে রেখেছেন ৬ দিন ধরে। আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সুজানগর থানার কনস্টেবল আনিসুর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইশতিয়াক আমার মেয়েকে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেছে। তবে সে এখন এখানে নাই। বাড়ি যাওয়ার কথা বলে গত দুই দিন আগে চলে গেছে। আবার বলছে যে, ছেলের বাবা প্রতারণা করে ছেলেকে নিয়ে গেছে। তিনি সাংবাদিকদের একেক সময় একেক কথা বলেন।
এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান জানান, তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।