অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হাকালুকির জলমহাল
আব্দুর রব, বড়লেখা (মৌলভীবাজার)
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০০ পিএম
দেশের সর্ববৃহৎ জলাভূমি হাকালুকি হাওড়ে শীতের শুরুতেই ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে অতিথি পাখি। হাওড়ের বিভিন্ন বিলে বিচরণ করছে পৃথিবীর ঠাণ্ডা প্রধান বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসা হাঁস জাতীয় এসব পাখি। নানা রঙের আর বর্ণের দেশি-বিদেশি পাখির অবাধ বিচরণে মুখর হাওড়ের বিলগুলো।
অসাধু শিকারিদের প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নিলে বিগত কয়েক বছরের রেকর্ডসংখ্যক অতিথি পাখির সমাগমের সম্ভাবনা দেখছেন পাখিপ্রেমি পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
হাকালুকি হাওড়ের বালিজুরি, জলা, পোয়ালা, দুধাই, চাতলা, হাওড়খালসহ বিভিন্ন বিলে সরেজমিনে বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি পাখি ভেসে বেড়াতে দেখা গেছে।
হাওড়পাড়ের বাসিন্দা ও বিভিন্ন জলমহালের ইজারাদারের লোকজন জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অতিথি পাখির সমাগম বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এখনো অসাধু কোনো শিকারির তৎপরতা দেখা যায়নি। যার কারণে অতিথি পাখিরা বিলের খুব কাছাকাছি প্রান্তে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লোকজনও পাখি দেখতে হাওড়ে আসছেন। পানির উপর ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য খুব কাছে থেকে উপভোগ করছেন।
প্রশাসিনকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে যদি শিকারিদের প্রতিরোধ করা যায় তবে, এবার রেকর্ডসংখ্যক অতিথি পাখির সমাগম ঘটতে পারে। এছাড়া শিকারিদের অপতৎপরতা না থাকলে বিলের কিনারায় পাখিরা বিচরণ করবে। এতে হাজার হাজার পাখির ভেসে বেড়ানোর মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ পাবেন আগত পাখিপ্রেমিরা।
অতিথি পাখি দেখতে আসা হাইকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সাদেক আব্দুল্লাহ জানান, প্রতিবছরই তিনি শীত মৌসুমে দেশি-বিদেশি পাখি দেখতে হাকালুকি হাওড়ের বিভিন্ন বিলে যান। গত ২-৩ বছরের তুলনায় এবার পাখির সমাগম বেশি দেখছেন। মনে হচ্ছে, পাখিগুলোর ভীতি কমেছে, বিলের কিনারায় বিচরণ করছে। এতে বেশ কাছে থেকে নানা রঙের পাখির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরেছেন।
তিনি আরও বলেন, অতিথি পাখির নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে পারলে লাখ লাখ অতিথি পাখির সমাগমে ভরে উঠবে হাকালুকি হাওড়। পর্যটকরা আকৃষ্ট হয়ে ছুটে আসবে এখানে। এতে পর্যটন খাতে সরকারের ব্যাপক রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
ইউএনও তাহমিনা আক্তার জানান, হাকালুকি হাওড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা, বিশেষ করে অতিথি পাখি শিকার বন্ধে প্রশাসন অত্যন্ত কঠোর। এখনো অসাধু পাখি শিকারিদের কোনো তৎপরতার খবর পাননি। বিভিন্ন জলমহালের ইজাদার, স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের শিকারিদের ব্যাপারে নজরদারির নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। কোনো তৎপরতা চালালেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অসাধুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।