কণ্ঠশিল্পী কেকার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন
শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৩ পিএম
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সুদীপ্তা দাস কেকার (২৫) অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া বুধবার সন্ধ্যায় শাহজাদপুর কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানে সম্পন্ন হয়েছে। পরলোকগত কণ্ঠশিল্পী কেকা শাহজাদপুর পৌর শহরের সাহাপাড়া মহল্লার অতল কৃষ্ণ দাস বাসুদেবের মেয়ে।
মঙ্গলবার দুপুরে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পিপিডি হাসপাতালে, এরপর সেখান থেকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সিরাজগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বগুড়ায় নেওয়ার পথে বিকাল ৩টার দিকে মারা যান।
খবর পেয়ে পুলিশ কেকার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে রাখে। এরপর বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে এদিন বিকালে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সন্ধ্যায় শাহজাদপুর কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
এর আগে সোমবার রাতে শাহজাদপুর উপজেলার দাড়াদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ পালপাড়া গ্রামের বিকাশ কর্মকারের ছেলে বগুড়ায় ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত হৃদয় কর্মকার মদন (৩০) তার ঠনঠনিয়ার বাসায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার এনজিওতে কর্মরত স্ত্রী ও ৭-৮ বছরে এক কন্যাসন্তান রয়েছে। এই দুই অস্বাভাবিক মৃত্যু ও অপর এক যুবকের নাম জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় ত্রিভুজ প্রেমে আত্মহত্যার নিউজ ছড়িয়ে পড়ে।
বিষয়টি মৃত দুই পরিবারের স্বজনদের নজরে এলে তারা এর প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে মৃত কণ্ঠশিল্পী সুদীপ্তা দাস কেকার বাবা অতল কৃষ্ণ দাস বাসুদেব ও কাকা কনক দাস বলেন, মদন ও অপর যুবকের সঙ্গে আমাদের কেকার কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। আমরা মদন নামের ওই ব্যক্তিকে চিনিও না। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা গুজব। এ অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।
অপরদিকে মৃত মদনের বাবা বিকাশ কর্মকার বলেন, আমার ছেলে ১৩ বছর ধরে চাকরির সুবাদে বগুড়ায় বাস করে। তার স্ত্রী একটি এনজিওতে চাকরি করে। তাদের ৭-৮ বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
কণ্ঠশিল্পী কেকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমরা এ অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছি।
মদনের আত্মহত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, তুচ্ছ বিষয়ে স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে সে আত্মহত্যা করেছে। তিনি বলেন, আমার ছেলের বউ আমার বাড়িতেই থেকে ছেলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সমস্ত কাজকর্ম করছেন। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আবু সাঈদ বলেন, এ ঘটনায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। আমরা দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি; কিন্তু তাদের কাছ থেকে প্রেমের সম্পর্কের কোনো তথ্য পাইনি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
অপরদিকে বগুড়া শহরের বনানী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম জানান, হৃদয় কর্মকার মদন গত সোমবার রাত ১০টার দিকে পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে নিজ শয়ন কক্ষে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মৃত কণ্ঠশিল্পী সুদীপ্তা দাস কেকা অবিবাহিত ও শাহজাদপুরের পূরবী সংগীত বিদ্যালয়ের মেধাবী কণ্ঠশিল্পী ছিলেন। তিনি সংগীতে রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন। এছাড়া তিনি এ বছর শাহজাদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে স্নাতক সম্মান পাশ করেন।