Logo
Logo
×

সারাদেশ

ধর্ষণে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা, ১৩ লাখ টাকায় রফাদফা করার অভিযোগ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)

প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ পিএম

ধর্ষণে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা, ১৩ লাখ টাকায় রফাদফা করার অভিযোগ

সৌদি আরব প্রবাসীর ধর্ষণে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বারদী নুনেরটেক মধ্যপাড়া এলাকায় ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় দুই বিএনপি নেতা মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন।

ইতোমধ্যে ওই দুই নেতা সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ১৩ লাখ টাকায় ঘটনা রফাদফা করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ টাকা থেকে তারা দুই নেতা মিলে তিন লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অনেকেই অভিযোগ তোলেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক মধ্যপাড়া গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী আব্দুর রব পার্শ্ববর্তী বাড়ির আহম্মদ মিয়ার ১৬ বছর বয়সি মেয়ে নুনেরটেক মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে তার বাসায় একা পেয়ে ধর্ষণ করে। তার ধর্ষণে ওই কিশোরী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ওই গ্রামে গত সোমবার সন্ধ্যায় এক সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

ওই বৈঠকে বারদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া ও বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ও স্বপনসহ তাদের লোকজন ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লাগে। সালিশ বৈঠকে প্রবাসী আব্দুর রবকে ১৩ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য রফাদফা করা হয়।

বৈঠকে আব্দুর রব মিয়া নগদ ৩ লাখ টাকা বিএনপি নেতা শাহজাহানের কাছে প্রদান করেন। ওই টাকা বুধবার পর্যন্ত ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের হাতে দেওয়া হয়নি বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। তবে ওই টাকা বিএনপি নেতার কাছে গচ্ছিত রয়েছে বলে জানানো হয়। বাকি ১০ লাখ টাকা আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে দেওয়ার কথা রয়েছে।

বিচার সালিশের বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, ১৩ লাখ টাকা রফাদফার পরও বিএনপির দুই নেতাকে আরও ৩ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে এ সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই তিন লাখ টাকা তারা ভাগবাটোয়ারা করার জন্য এ বিচার সালিশে রায় প্রদান করেন।

ভুক্তভোগী কিশোরীর ভাবি বলেন, আব্দুর রবের মেয়ের সঙ্গে ভুক্তভোগী কিশোরী প্রতিদিন রাতে একসঙ্গে ঘুমাত। এ সুযোগে সৌদি প্রবাসী তাকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে ছেলের পরিবারকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। পরে তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করার কারণে কিশোরী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সম্প্রতি এ বিষয়টি নিয়ে সালিশ বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে ১৩ লাখ টাকায় বিষয়টি রফাদফা করা হয়। বৈঠকে ৩ লাখ টাকা নগদ দেওয়ার পরও কিশোরীর পরিবার এখনো এক টাকাও হাতে পায়নি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুর রবের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী জোহরা বেগমের দাবি, তার স্বামী এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত নয়।

তবে কেন ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

বারদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া বলেন, বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একটি সালিশ বৈঠক হয়েছে। কিশোরী ও অভিযুক্তদের কথা শুনে বৈঠকে এলাকাবাসী ১৩ লাখ টাকা রায় প্রদান করেছে। তবে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সঠিক নয়।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে থানায় এখনো পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি। এ বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম