বেনাপোলে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা ২৮ টন ফেব্রিক্স জব্দ
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ পিএম
মিথ্যা ঘোষণায় প্রায় ২ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা ফেব্রিক্সের একটি চালান জব্দ করেছে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গত ১৭ ডিসেম্বর এ চালানটি বেনাপোল স্থলবন্দরের ৪২নং শেড থেকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার রাতে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামানের মাধ্যমে বিষয়টি জানা যায়।
বন্ডের (গার্মেন্টসের পণ্য, যেগুলোর শুল্ক পরিশোধ করা লাগে না) নামে ঘোষণা দেওয়া হলেও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি ফেব্রিক্স (শার্টিং-শুটিংয়ের কাপড়ের শুল্ক অনেক) নিয়ে আসছিল।
ঢাকার গাজীপুর এলাকার শিশির নিটিং নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ৬৮১ প্যাকেজ, যার ওজন ২৮ হাজার ৩০০ কেজি (২৮ টন)। যার বিল অব এন্ট্রি নম্বর ১১০৭৬৯। এর শুল্ক আসে প্রায় ২ কোটি টাকা। ভারতের এস জে ফেব্রিক্স নামে প্রতিষ্ঠান থেকে মাল আমদানি করা হয়েছে। এ পণ্যচালানটি ছাড়করণের দায়িত্ব ছিল জারিন এন্টারপ্রাইজ সিএন্ডএফ এজেন্টের।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ওই ফেব্রিক্স বেনাপোল স্থলবন্দরের ৪২ নম্বর শেডে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে গোপন সংবাদে জানতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরপর তারা পণ্যচালানটি জব্দ করে।
বন্দর ব্যবহারকারী একটি সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল স্থলবন্দরে অসাধু একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যোগদানের পর তারই সহায়তায় কয়েকজন সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী এবং ভারতের কয়েকটি রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে একটি সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। তারা বিভিন্ন সময়ে ভারত থেকে আনা উন্নতমানের শার্টিং-শুটিংয়ের কাপড়, শাড়ি, থ্রি-পিস ইত্যাদিকে বন্ডের নামে ঘোষণা দিয়ে সেগুলোকে শুল্কমুক্ত করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা নিজেরা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, দীর্ঘদিন যাবত বেনাপোলের একটি চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে স্থলবন্দরের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে কাগজপত্রবিহীন ভারতীয় পণ্য এনে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে।
যোগাযোগ করা হলে ৪২ নম্বর শেডের ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রথমদিন এক ট্রাক এবং পরেরদিন দুই ট্রাক মোট তিন ট্রাক ফেব্রিক্সের চালান আনলোড হয়েছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সেগুলো পরীক্ষা করেছেন। মাল শেডেই রয়েছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, একটি অসাধু চক্র বেনাপোল বন্দরকে অস্থিতিশীল করতে নানামুখী অপকর্ম করছে। তারই ধারাবাহিকতায় বেশ কিছুদিন ধরে তারা মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানির নামে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। সম্প্রতি বেনাপোল স্থলবন্দরে বন্ডের নামে ফেব্রিক্সের চালানের একটি ঘটনার কথা শুনেছি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে পরবর্তীতে আর এমন ঘটনা ঘটবে না।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, মিথ্যা ঘোষণায় শতভাগ পলিয়েস্টার ঘোষণা দিয়ে ২৮ টন ৩০০ কেজি উন্নতমানের ফেব্রিক্স আনা হয়েছে। এই মাল জব্দ করা হয়েছে। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।