Logo
Logo
×

সারাদেশ

হত্যার পর হরলুজার লাশ পোড়ান যুবলীগ নেতার ছেলে, জানা গেল কারণ

Icon

মহিউদ্দিন মিশু, আখাউড়া

প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২৯ পিএম

হত্যার পর হরলুজার লাশ পোড়ান যুবলীগ নেতার ছেলে, জানা গেল কারণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় যুবলীগ নেতার বাড়িতে হরলুজা বেগমকে হত্যার পর মাটি খুঁড়ে লাশ পুড়িয়ে গুম করার চেষ্টা করা হয়। প্রথমে ওই নারীকে অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করা হয়। পরে তার পরিচয় মেলে। এরপর তাকে হত্যা ও লাশ পুড়িয়ে গুম করার কারণ জানা গেল।

হরলুজা বেগমের স্বামী নূরুল ইসলাম ব্যাপারী উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামের কলোনির বাসিন্দা।

শারমিন বেগম হরলুজাকে খুনের ঘটনায় আখাউড়া থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নিহতের বড় মেয়ে রুমা আক্তার (৩৫) বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে ১ জনকে আসামি করা হয়।

বুধবার দুপুরে হত্যাকারী ফারহান ভূঁইয়া রনিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত আসামি রনিকে গতকাল সকালেই ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় গ্রেফতার করে আখাউড়া থানা পুলিশ।

আখাউড়া থানার ওসি ছমিউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি যুগান্তরকে জানান, আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামে যুবলীগ নেতা শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া শানুর বসতবাড়িতে মঙ্গলবার ভোরে শারমিন বেগম হরলুজাকে হত্যা করে তার ছেলে ফারহান ভূঁইয়া রনি। হত্যার পর মাটি খুঁড়ে লাশ পুড়িয়ে গুম করার চেষ্টার ঘটনায় গ্রেফতার রনি পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

রনির কাছে শারমিন বেগম হরলুজা তার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে সম্পত্তি গ্রাস করার চক্রান্তে লিপ্ত ছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছেন গ্রেফতার রনি।

রনি জানান, শারমিন বেগম তাকে তাবিজ করেছেন। মায়ের অনুপস্থিতে রনিকে খাবার খাওয়াতেন শারমিন বেগম হরলুজা। এ সুযোগে খাবারের সঙ্গে তাকে তাবিজ করে মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করায় ক্ষুব্ধ হয়ে হরলুজাকে হত্যা করেছেন।

ভিকটিম শারমিনের মেয়ে জিমা আক্তার যুগান্তরকে বলেন, কাজের সন্ধানে আমার বাবা মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। এরপর মিথ্যা কথা বলে রনি আমার মাকে ভোরবেলা তার বাড়িতে নিয়ে যায়। কেন তাকে নির্মমভাবে হত্যা করল। তার ধারণা- রনি তার মাকে হয়তো ধর্ষণ করেছে। মা যাতে কাউকে না জানাতে পারেন সেজন্য হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে লাশ গুম করার চেষ্টা করেছে। তিনি তার মায়ের হত্যাকারীর বিচার দাবি করেন।

শারমিনের স্বামী নূরুল ইসলাম ব্যাপারী যুগান্তরকে বলেন, হীরাপুর গ্রামে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া শানুর জমিতে ঘর তুলে আমরা বসবাস করে আসছি। তাদের পরিবারে সবার সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তাদের পরিবারে যেকোনো কাজে আমরা সহযোগিতা করি। মঙ্গলবার ভোরবেলা কাজের সন্ধানে ঘর থেকে বের হই। দুপুরের দিকে শুনতে পাই আমার স্ত্রীকে শানুর ছেলে রনি মেরে ফেলেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কী কারণে এ ঘটনা সে ঘটিয়েছে আমি বুঝতে পারছি না। যে ছেলে আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছে তাকে কোলে-পিঠে আমরাই বড় করেছি। আমি আমার স্ত্রী হত্যার বিচার চাই, আমি তার ফাঁসি চাই।

আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনূর ইসলাম যুগান্তরকে জানান, আখাউড়া উপজেলা দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগ নেতার ছেলে রনি মঙ্গলবার ভোরে হরলুজা বেগমকে পরিত্যক্ত ঘরে হত্যা করে। এরপর দেহ থেকে মাথা ছিন্ন করে ঘরে গর্ত করে লাশ পুড়িয়ে গুম করার চেষ্টা করে। দেহের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। পরে রনির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাশের পুকুর পাড় থেকে মাথা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়।

রনির স্বজনরা জানান, মাদক সেবন ও চুরি-ছিনতাই করার কারণে রনির স্ত্রী দুই বছর আগে তাকে ছেড়ে গেছে। তার অমানুষিক অত্যাচারে তার বাবা-মা বাড়িতে থাকতে পারে না। কয়েক দিন ধরে রনির অত্যাচারে তার বাবা যুবলীগ নেতা শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া শানু পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বাড়িতে একাই থাকে রনি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম