ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় যুবলীগ নেতার বাড়িতে হত্যার পর মাটি খুঁড়ে লাশ পুড়িয়ে গুম করার চেষ্টার ঘটনায় ওই অজ্ঞাত নারীর পরিচয় মিলেছে।

ওই নারীর নাম হরলুজা বেগম। তার স্বামী নূরুল ইসলাম ব্যাপারী। উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামে কলোনির বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছেন।

আখাউড়া থানা পুলিশ জানান, উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া শানুর বসতবাড়িতে ওই নারীকে হত্যার পর মাটি খুঁড়ে লাশ পুড়িয়ে গুম করার চেষ্টা করে তার মাদকাসক্ত ছেলে ফারহান ভূঁইয়া রনি। অবশ্য এ সময় শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া শানু ও তার স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না।

আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনূর ইসলাম যুগান্তরকে জানান, যুবলীগ নেতার ছেলে রনি ভোররাতে ওই নারীকে তার বসতবাড়ির পরিত্যক্ত ঘরে হত্যা করে দেহ থেকে মস্তক ছিন্ন করে ফেলে। এ সময় সে পরিত্যক্ত ঘরে মাটি খুঁড়ে গর্তে ঢুকিয়ে হরলুজা বেগমের মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে গুম করার চেষ্টা করে। আগুনে তার দেহের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাশের একটি পুকুর পাড় থেকে খণ্ডিত মস্তক ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়।

পাশের বাড়ির বাসিন্দা এনামুল ও তার ভাই রুমান যুগান্তরকে জানান, তাদের ঘর থেকে রাতে রাজহাঁস চুরি হয়। সকাল ৭টার দিকে হাঁস খুঁজতে বের হলে পাশের বাড়ির বাসিন্দা শাহনেওয়াজ ভূঁইয়ার পরিত্যক্ত একটি টিনের ঘর থেকে ধোঁয়ার গন্ধ বের হতে দেখেন।

সেখানে থাকা ফারহান ভূঁইয়া রনির কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বাড়ির ময়লা কাপড়-চোপড় পোড়াচ্ছেন। তার কথায় সন্দেহ হলে প্রতিবেশী যুবক এনামুল ও তার ভাই রুমান আগুনে কি পুড়ানো হচ্ছে দেখতে চান। এ সময় রনি ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের মারধরের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। এতে সন্দেহ ঘনীভূত হলে তারাসহ গ্রামের লোকজন একত্রিত হয়ে ওই গর্তে গিয়ে মরদেহ পুড়তে দেখেন। এ সময় গ্রামের লোকজন ফারহান ভূঁইয়া রনিকে বেঁধে আটক করে পুলিশকে খবর দেন।

তবে কেন কী কারণে ওই নারীকে হত্যা করা হয়েছে সেই রহস্য উদঘাটনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জানিয়েছেন পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনূর ইসলাম।

তিনি জানান, রনির পিতা যুবলীগ নেতা শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া শানু পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতারকৃত রনি এলাকার চিহ্নিত মাদকাসক্ত ও ছিনতাইকারী। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।