Logo
Logo
×

সারাদেশ

মেয়ের বিয়েতে থাকা হলো না জাহাজ মাস্টার কিবরিয়ার

Icon

জাহিদ রিপন, ফরিদপুর

প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩০ পিএম

মেয়ের বিয়েতে থাকা হলো না জাহাজ মাস্টার কিবরিয়ার

জাহাজ মাস্টার কিবরিয়া বিশ্বাসের বাড়িতে আসার কথা ছিল মঙ্গলবার। তিনি বাড়িতে এলেন ঠিকই নির্ধারিত দিনে, তবে লাশ হয়ে। বড় মেয়ে হাবিবা আক্তারের বিয়ের তারিখ ঠিক হয়েছে আগামী ১০ জানুয়ারি, তাই চলছিল বিয়ের প্রস্তুতি।

চাঁদপুরের মেঘনায় সারবাহী জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার মাস্টার কিবরিয়া বিশ্বাসের বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম। 

চাঁদপুরের মেঘনায় সারবাহী জাহাজে পাওয়া সাত মরদেহের মধ্যে একটি মরদেহ জাহাজ মাস্টার কিবরিয়া বিশ্বাসের। তার ফরিদপুরের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। খবর পেয়ে বাড়িতে ভিড় করছেন পাড়া প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনরা। শোকে স্তব্ধ সকলে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর।

প্রায় ৪০ বছর আগে জাহাজের কাজে যোগ দেন কিবরিয়া বিশ্বাস। এমভি আল বাখেরা জাহাজে ছিল তার চাকরি জীবনের শেষ কর্মদিবস; কিন্তু সোমবার সকালে চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীতে ওই জাহাজ থেকে খুন হওয়া আরও ছয়জনের সঙ্গে উদ্ধার করা হয় তার মরদেহ।

সরেজমিন মঙ্গলবার সকালে ফরিদপুর জেলা সদরের গেরদা ইউনিয়নের জোয়াইর গ্রামে কিবরিয়া বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শোকে স্তব্ধ পুরো পরিবার। প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজন এসেছেন তাদের মাঝেও শোকের ছায়া। যে বাড়িতে সোমবার সকাল পর্যন্ত ছিল বিয়ের সব আয়োজন। আজ সেই বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

নিহত কিবরিয়া বিশ্বাসের স্ত্রী রোজি বেগম জানান, রোববার রাতে কথা হয়েছিল তার স্বামীর সঙ্গে। তিনি বলেছিলেন, আজকে কাজের চাপ অনেক ছিল, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ব। আগামীকাল কথা হবে। বিয়ের আয়োজন ঠিকঠাকভাবে চালিয়ে যাও, আমি আসছি দুই-এক দিনের মধ্যে। সোমবার সকাল থেকেই তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বিষয়টি জানতে পারি।

তিনি বলেন, আগামী ১০ জানুয়ারি বড় মেয়ের বিয়ে। বাড়িতে চলছিল আয়োজন। এমন আনন্দের সময় জীবনের সবচেয়ে  দুঃসংবাদ পাব ভাবতেও পারিনি। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন আমার স্বামী। আমার সব শেষ হয়ে গেল। 

কিবরিয়া বিশ্বাসের শিশু সন্তান রুবায়াত বলেন, বাবার সঙ্গে রোববার কথা হয়েছিল। বাবা বলেছিল, বোনের বিয়েতে অনেক আনন্দ করবা। বাবা চলে গেল, আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে তাদের কঠিন বিচারের দাবি জানাই।

নিহত কিবরিয়া বিশ্বাসের ভাগিনা জাকারিয়া বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। পাশাপাশি কিবরিয়ার পরিবারের পাশে সরকারের দাঁড়ানোর আহবানও জানাই।

গেরদা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আরিফ হোসেন বলেন, কিবরিয়া একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তাকে এভাবে চলে যেতে হবে ভাবিনি। মেয়েকে বিয়ে দেবে অনেক খুশি ছিল। আমার সঙ্গে মাঝে মধ্যে মোবাইলে কথা হতো। বলেছিল ভাই আর বেশিদিন চাকরি করব না, চলে আসব। আজকে বিয়ের আনন্দের পরিবর্তে পুরো গ্রামে শোকের মাতম চলছে। আমরা তার এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। যারাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচারের দাবি জানাই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম