চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে নাকে খত
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ পিএম
লক্ষ্মীপুরের চুরির অপবাদ দিয়ে রহমত উল্লাহ নামে এক যুবককে নাকে খত দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে একই অভিযোগে তাকে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। একপর্যায়ে তাকে লাঠিপেটাও করা হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনার ৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওটি প্রতিবেদকের হাতে আসে।
এর আগে রোববার দুপুরে সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নে কাজীর দিঘীরপাড় বাজারে রহমত উল্লাহকে চুরির অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করে বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী।
ভুক্তভোগী রহমত উল্লাহ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার চৌকিদার বাড়ির আহমদ উল্লাহর ছেলে বলে জানা গেছে। তবে এ ঘটনায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায়, রহমত উল্লাহকে পেছন দিক থেকে একটি খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় কয়েকজনের হাতে লাঠি দেখা যায়। একপর্যায়ে একজন এসে রহমতকে নাকে খত দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত যেতে বলে। খত দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত গেলেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। নাকে খত দেওয়া শেষ হতেই পেছন থেকে তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে দেখা যায়। নাকে খত দেওয়ার সময় একজনকে তাকে লাথি দিতে দেখা যায়। সুমন কাজীর দিঘীরপাড় বাজারের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাজীর দিঘীরপাড় বাজারের ৩ জন ব্যবসায়ী জানান, ওদুদ মাওলানা দুপুরে মুদি দোকান খালি রেখে নামাজ পড়তে যান। তখন রহমত উল্যাহ তার দোকানে ঢুকে ক্যাশবাক্স থেকে টাকা চুরির চেষ্টা করে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাকে আটক করে মারধর করে একটি খুঁটিতে বেঁধে রাখে। পরে ব্যবসায়ী নিজাম ও সুমনসহ কয়েকজন তাকে নাকে খত দিতে বাধ্য করেছে। জনসম্মুখে নাকে খত দেওয়া শেষ হলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভিডিওতেও শোনা যায়- সুমন ওই যুবককে নাকে খত দিতে বলে। এছাড়া ভিডিওতে নিজামের হাতেও লাঠি দেখা যায়। খুঁটিতে বাঁধার আগে যুবককে সবাই এলোপাতাড়ি মারধর করে।
বাজারের ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন বলেন, চুরির অভিযোগ এনে ওই যুবককে মারধর করে কয়েকজন। আমি তাকে উদ্ধার করেছি। সুমনসহ কয়েকজন তাকে নাক খত দিতে বলেছে। আমি ঘটনাস্থল থাকায় তাকে বেশি মারধর করতে পারেনি। আমি তাকে রক্ষা করেছি।
বাজারের ব্যবসায়ী মো. সুমন বলেন, ঘটনাস্থল ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় লোকজন ছিল। আমি ওই যুবককে নাকে খত দিতে বলেনি। স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা সবাই মিলেই তাকে মারধর ও নাকে খত দিতে বাধ্য করেছে।
উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। ভিডিওটিও এখনো নজরে আসেনি। বাজার থেকে কোন ব্যবসায়ীও আমাকে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ভিডিওটি এখনো নজরে আসেনি। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।