কঙ্কাল চুরি করে বিক্রিই ছিল তাদের কাজ
মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ পিএম
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় কঙ্কালসহ চোর চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পৌরসভার গেট থেকে তাদের আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ময়মনসিংহ জেলার কুঠুরাকান্দা থানা এলাকার রুবেল মিয়া (২৪) এবং জামালপুরের রুহিলী চরপাড়ার মনিরুজ্জামান মনির (২৫)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুক্তাগাছা থানার পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, কঙ্কাল চুরি করে বিক্রি করাই ছিল তাদের কাজ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চক্রের সদস্যরা উপজেলার চেচুয়া এলাকার বিভিন্ন কবরস্থান থেকে লাশ তুলে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কঙ্কাল সংগ্রহ করে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে চড়া দামে নির্ধারিত ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে অভিযান চালিয়ে মুক্তাগাছা পৌরসভার গেটে গাড়ির জন্য অপেক্ষমাণ দুজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ তল্লাশি করে পলিথিনে মোড়ানো ২টি মাথার খুলিসহ মানবদেহের বিভিন্ন হাড়গোড় জব্দ করে থানার এসআই সাইফুল ইসলাম।
দীর্ঘদিন ধরে কঙ্কাল চুরি এবং বিক্রি করার কাজ করছিল বলে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রুবেল ও মনির।
মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. কামাল হোসেন যুগান্তরকে জানান, কঙ্কাল চোর চক্রের সদস্যরা জেলা-উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে। তারা প্রথমে কবর থেকে মরদেহ তুলে গভীর অরণ্য বা পাহাড়ি জনপদে নিয়ে যায়। পরে কেমিক্যালের মাধ্যমে লাশ পচিয়ে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে মানবদেহের পূর্ণাঙ্গ কঙ্কাল সংগ্রহ করে। পরে তা তুলে দেওয়া হয় পাচারকারীদের হাতে। এসব কঙ্কাল চলে যায় পাশের দেশ নেপাল ও ভারতের মেডিকেল শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও চিকিৎসকদের কাছে। এ ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোও আলাদা করে বিক্রি হয়ে থাকে। বিশেষ করে হালুয়াঘাট, ফুলবাড়িয়া, মুক্তাগাছা ও ভালুকা অঞ্চলের গহীন অরণ্য, পাহাড়ি জনপদ ও নির্জন স্থান বেশি থাকায় সেখানে কঙ্কাল চুরির ঘটনা বেশি হয়। এর আগে জেলার মুক্তাগাছা ও ভালুকা থেকে বিপুল পরিমাণ পূর্ণাঙ্গ কঙ্কাল ও তার অংশবিশেষ উদ্ধার করে পুলিশ।