বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. গাজী তৌহিদুল আলম চৌধুরী সনির বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের শৃঙ্খলা বিষয়ক শাখা একজন উপযুক্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত করে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলে ডিজিকে নির্দেশ দিয়েছে। উপ-সচিব শাহিনা পারভীন নির্দেশ দেওয়া ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।

অভিযোগে জানা গেছে, বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার এক বিধবা নারী গত ১৫ অক্টোবর শিক্ষা সচিবের কাছে সহযোগী অধ্যাপক ড. গাজী তৌহিদুল আলম চৌধুরী সনির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেন। 

অভিযোগের কপি মাউশির মহাপরিচালক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের সচিব, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিব এবং বগুড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে দিয়েছেন।

ওই নারী অভিযোগে উল্লেখ করেন, দুই বছর আগে ২৪তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা, বর্তমানে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ড. গাজী তৌহিদুল আলম চৌধুরী সনির সাথে পরিচয় হয়।

বিগত দুই বছর তিনি ওই নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক রাখেন ও বিয়ের প্রলোভনে তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। ড. সনি ওই নারীকে সম্পর্কের শুরু থেকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে থাকেন। 

তিনি বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরবর্তীতে দীর্ঘসূত্রিতা করেন। ড. সনি বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ওই নারীর বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ও শারীরিক সম্পর্ক করেন। যার অসংখ্য প্রমাণ তার কাছে সংরক্ষিত আছে। ওই নারী প্রয়োজনে ওইসব প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারবেন।

ওই বিধবা নারী আরো বলেন, তার বাসায় ড. গাজী তৌহিদুল আলম চৌধুরী সনির মোবাইল ফোনে অন্যান্য মেয়েদের সঙ্গেও আপত্তিকর মেসেজ দেখেন। পরবর্তীতে তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি (সনি) পূজার ছুটিতে গত ১১ অক্টোবর শুক্রবার বাদ আসর ঢাকার তেজগাঁও সড়ক ও জনপদ ভবনের রেস্ট হাউজে অবস্থানকালে কাবিন ছাড়া তাকে বিয়ে করেন। 

বিয়ের রেজিষ্ট্রি করতে বললে সনি তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সংসার করার অনুরোধ জানালে তিনি (সনি) ওই নারী ও তার ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এমনকি সনি ওই নারীকে মিথ্যা হত্যা মামলার আসামি করার চেষ্টা করেন। 

এছাড়াও ড. গাজী তৌহিদুল আলম চৌধুরী সনি বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হওয়ার পর বিভিন্ন সময় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের কারণে এ ব্যাপারেও তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।

বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শওকত আলম মীর বলেন, সহযোগী অধ্যাপক ড. গাজী তৌহিদুল আলম চৌধুরী সনি বিরুদ্ধে অভিযোগ মৌখিকভাবে শুনেছেন ও ফেসবুকে দেখেছেন। দুই পক্ষ সামনা সামনি না বসলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া কঠিন। অভিযোগের ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ডিজিকে তদন্ত করতে বলেছেন। তিনি তদন্ত কমিটি গঠন বা আমাকে জানালে অভিযোগের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান, সহযোগী অধ্যাপক ড. গাজী তৌহিদুল আলম চৌধুরী সনি তার বিরুদ্ধে আনীত ওই নারীর অভিযোগ দৃঢতার সাথে অস্বীকার করেন। 

তিনি বলেন, ওই নারী মানুষের সাথে প্রতারণা করে টাকা আদায় করে থাকে। তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতেই তিনি (নারী) মিথ্যাচার করছেন। মন্ত্রণালয়ে ওই নারীর অভিযোগ ও তদন্ত করার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।