আলোচনার মাধ্যমে সেই তিন ডাকাতকে আত্মসমর্পণ করানো হয়

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৯ পিএম

অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছেন ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রূপালী ব্যাংকে হানা দেওয়া তিন ডাকাত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে আলোচনার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন তারা। তবে তাৎক্ষণিক ডাকাতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
জানা গেছে, আলোচনার মাধ্যমে ওই তিন ডাকাতকে আত্মসমর্পণ করানো হয়। পরে তাদের সেখান থেকে বের করে নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ডাকাতরা ব্যাংকের ৮ জন স্টাফ ও ১০-১২ জন গ্রাহককে জিম্মি করে রেখেছিলেন, তাদের ইতোমধ্যে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যাংকের ভল্টও সুরক্ষিত আছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে ডাকাতরা ব্যাংকে ঢুকে। এ সময় পাশের মসজিদের মাইক থেকে ডাকাতির খবর জানানো হলে স্থানীয় কয়েক হাজার লোক ব্যাংকের ওই শাখা ঘিরে ফেলেন ও বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ব্যাংকটির চারপাশে অবস্থান নেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খালিদুল হক হাওলাদার, ঢাকার পুলিশ সুপার আহমেদ মুঈদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়াসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
র্যাব–১০ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়, চুনকুটিয়া এলাকায় রূপালী ব্যাংকে ঢুকে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে তিন ডাকাত। সেই তিনজন আগ্নেয়াস্ত্রসহ যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকাত দলের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের আত্মসমর্পণে রাজি করানো হয়। ডাকাত দলের সদস্যরা জানালা দিয়ে অস্ত্র সমর্পণ করে। একটি বন্দুক জানালা দিয়ে ফেলা হয়। বাকি অস্ত্র ব্যাগে ভরে বাইরে ফেলে দেয় ডাকাত দলের সদস্যরা। পরে একে একে ডাকাত দলের সদস্যরা বেরিয়ে আসে। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তিন ডাকাত সদস্যকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান।
ব্যাংকের ম্যানেজার শেখর মণ্ডল জানান, ডাকাতরা ব্যাংকে যখন প্রবেশ করে তখন তিনি মার্কেটিংয়ের কাজে বাহিরে ছিলেন।
তিনি বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রসহ ডাকাতরা ব্যাংকে ঢুকে স্টাফ ও কয়েকজন গ্রাহককে জিম্মি করে। সবার মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। ডাকাতরা যখন বুঝতে পারে তারা আটকা পড়েছে, তখন এক স্টাফের মোবাইল ফোন থেকে তাকে ফোন করা হয়। তারা ১৫ লাখ টাকা ও নিরাপদ প্রস্থান দাবি করে। পরে ওই মোবাইলে দফায় দফায় ডাকাতদের সঙ্গে কথা বলেন এসপিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। এভাবে কয়েক ঘণ্টা চলার পর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তারা আত্মসমর্পণ করে ব্যাংক থেকে বেরিয়ে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তিন ডাকাত সদস্যের বয়স ১৮ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকাত সদস্যদের বিস্তারিত পরিচয় জানানো হয়নি।
এদিকে ব্যাংকে ডাকাত দলের হানা দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর উৎসুক জনতা সেখানে ভিড় করেন। এ সময় নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংকসংলগ্ন মূল সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি ডাকাত দলকে আত্মসমর্পণের জন্য পাশের মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেষ্টায় সন্ধ্যার দিকে আত্মসমর্পণ করে তারা।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহমেদ মুঈদ জানান, আত্মসমর্পণের পর ৩ ডাকাতকে তারা হেফাজতে নিয়েছেন। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।