নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশন
দোহারে ৫০ প্রতিবন্ধীসহ কয়েক সহস্রাধিক পরিবার পেল কম্বল
কাজী সোহেল, দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ পিএম
দুটি পা-ই ছোট, হাতের ওপর ভর করেই চলতে হয় দোহারের সুতারপাড়ার প্রতিবন্ধী কাঞ্চনকে। তিনি বলেন, আমি ঠিকমতো হাঁটতে পারি না। দুই সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়, ওদের নিয়ে কষ্টে চলতে হচ্ছে। টাকার অভাবে দুই-তিন বছর ধরে কম্বল কিনতে পারি না। একটা পুরান কাঁথা গায়ে দিয়ে শীতে কষ্ট করি। আইজ সালমা আপা আমারে একটা কম্বল দিছে। এটা গাইয়ে দিয়ে রাতে আরামে ঘুমাতে পারুম। আইজ আমি খুব খুশি। যে আমাগো কম্বল দিল আল্লাহ যেন তাকে অনেক বছর বাঁচাইয়া রাখেন।
কম্বল পেয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ঢাকার দোহারের সুতারপাড়ার প্রতিবন্ধী কাঞ্চন বেগম। নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বুধবার সকালে সুতারপাড়া হলের বাজারে কম্বল নিতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
দিনব্যাপী দোহারের পৌরসভা, সুতারপাড়ায়, নারিশা ও মুকসুদপুর ইউনিয়নে নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অসহায় ও দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।
কাঞ্চন বেগমের মতো কম্বল নিতে এসেছিলেন প্রতিবন্ধী ফজলুর রহমান (৮০)। তিনি বলেন, আমরা প্রতিবন্ধী বলে কেউ আমাদের কথা ভাবে না। শুধু সালমা ম্যাডামই প্রতি বছর একটা করে কম্বল দেন। এহানে কম্বল দিব শুনে এসেছি। সালমা ম্যাডামের স্বামীর নামে তৈরি করা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কম্বল পাইলাম। এই শীতে এটা পেয়ে অনেক উপকার হলো আমার।
কম্বল নিতে আসা দিনমজুর আক্কাস হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ বাজারে কম্বল কেনা অসম্ভব। একটা সাধারণ কম্বল কিনতে ৩-৪শ টাকা প্রয়োজন। সারাদিন খেটে কামাই করি ৫শ টাকা। প্রতি বছরই সালমা ম্যাডাম আমাগো কম্বল দেন। এবারও আশায় ছিলাম, আজ পাইলাম। সব বড়লোকেরা যদি ম্যাডামের মতো আমাগো পাশে দাঁড়াত।
কথা হয় প্রতিবন্ধী হামিদ ভূঁইয়ার (৯৭) সঙ্গে। তিনি বলেন, এই বয়সে সমাজে কারো কাছে দাম পাই না। এ দুঃসময়ে ম্যাডাম সালমা ইসলাম আমাদের কথা মনে রেখেছেন; তার জন্য মনপ্রাণ থেকে দোয়া ও ভালোবাসা রইল।
উল্লেখ্য, এ বছর ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার ২২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে প্রায় ৩০ হাজার শীতার্ত পরিবারের মাঝে নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে উপহার স্বরূপ কম্বল বিতরণ করেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম।