Logo
Logo
×

সারাদেশ

১০ কোটি টাকার মাল লুট, নেপথ্যে জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা ও সিন্ডিকেট

আবুল খায়ের

আবুল খায়ের

প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫ এএম

১০ কোটি টাকার মাল লুট, নেপথ্যে জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা ও সিন্ডিকেট

প্রতীকী ছবি।

কুমিল্লায় ঋণখেলাপি হয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া আসিফ ফ্যাশনের প্রায় ১০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি লুট হয়ে গেছে। জনতা ব্যাংক মতিঝিল শাখায় দায়বদ্ধ ওই প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রাংশসহ নানা পণ্য বিক্রি করে নিঃশেষ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ আসিফ ফ্যাশনে জনতা ব্যাংক কেয়ারটেকার নিয়োগ করেছে।

কিন্তু সেই কেয়ারটেকার মাহবুব খানের মাধ্যমেই ব্যাংক কর্মকর্তা এবং পলাতক মালিক পক্ষের একটি সিন্ডিকেট এর মালামাল বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এদিকে প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু মালামাল চুরি হয়েছে এমন দাবি করে একটি জিডি করেই অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী সিন্ডিকেট দায় এড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার জোরকানন এলাকায় আসিফ গ্রুপের দুটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় তিনশ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে এর মালিক সালাউদ্দিন আহমেদ দেউলিয়া হয়ে গেছেন। ঋণ উত্তোলন করে কয়েক বছর চলার পর রহস্যজনক কারণে প্রতিষ্ঠান দুটি বন্ধ করে দেয় মালিক পক্ষ। এরপর আখের গুছিয়ে সালাউদ্দিন সপরিবারে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। এরপর বন্ধ প্রতিষ্ঠানে কেয়ারটেকার নিয়োগ করে জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। চার বছর ধরে কেয়ারটেকার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন জনতা ব্যাংকের গার্ড মাহবুব খান।

স্থানীয়রা জানায়, কেয়ারটেকার মাহবুব খানের যোগসাজশে ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তা এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের একটি সিন্ডিকেট মিলে এক বছরে প্রতিষ্ঠানের ১০ কোটি টাকার মালামাল বিক্রি করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা থাকায় এখনো এর ভেতরের মালামাল অ্যাসেসমেন্ট করা হয়নি। এই সুযোগে তারা কোটি কোটি টাকার মাল বিক্রি করে দিচ্ছে। এলাকাবাসী জানায়, আসিফ গ্রুপের মালিক সালাউদ্দিন হয়তো আর দেশে আসবেন না। তিনি ব্যাংকের বিশাল অঙ্কের টাকা নিয়ে বিদেশে চলে গেছেন। এখন ব্যাংক যেহেতু ফ্যাক্টরি জব্দ করবে, তাই এই সুযোগে ভেতরের মালামালগুলো বিক্রি করে যা পাওয়া যায় তাই লাভ মনে করছে মালিক পক্ষ।

কেয়ারটেকার মাহবুব বলেন, ফ্যাক্টরির ভেতরে আনুমানিক ১০ কোটি টাকার মালামাল ছিল। এখন সামান্য আছে। বাকি মালগুলো লুটপাট হয়ে গেছে। মালামাল লুটের সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমাকে মারধর করে এসব লুট করে নেওয়া হয়েছে। মালিক পক্ষ এবং ব্যাংকের কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে অবগত আছেন। তিনি বলেন, প্রায় রাতেই ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে ভাঙারি ব্যবসায়ীরা এসে এখান থেকে ট্রাক ভরে মালামাল নিয়ে যায়। এসব মালামাল ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নির্দেশে আমি একবার থানায় জিডি করেছি।

জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিষ্ঠান দুটির মালিক কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদ মোটা দাগের টাকা হাতিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে সপরিবারে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। তার বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে মামলা চলছে। তবে মালামাল লুটের বিষয় নিয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না।

জনতা ব্যাংক মতিঝিল শাখার এজিএম শাহিন মাসুদ বলেন, আসিফ গ্রুপের ঋণ নিয়ে কুমিল্লার আদালতে মামলা চলছে। ওই শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে কি কি মালামাল রয়েছে আমাদের জানা নেই। মালামাল লুটের ঘটনায় কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হবে।

সদর দক্ষিণ থানার এসআই ইমাম হোসেন বলেন, আসিফ ফ্যাশনে চুরির ঘটনায় একটি জিডি হয়েছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম