বিজয় দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছে চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। সোমবার ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নগরীর উত্তর কাট্টলীতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মেয়র ডা. মো. শাহ্দাত হোসেন। এছাড়া বিভাগীয় কমিশনার ড. জিয়াউদ্দিন, পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এদিন চসিকের পক্ষ থেকে ১৩২ মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। 

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মেয়র শাহাদাত বলেন, ‘বিজয়ের ৫৩ বছরেও বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার তথা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত হয়নি। ৫৩টি বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু আমরা এখনো গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি। এখনো মৌলিক অধিকার নিয়ে আমাদের লড়াাই চালিয়ে যেতে হচ্ছে। মানুষের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত হলে, আমরা আমাদের বিজয়ের প্রকৃত সুফল অর্জন করতে পারব।’

এদিন সকালে নগরীর নিউমার্কেট এলাকার মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এবং কলেজ চত্বরে অস্থায়ী শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্কসবাদী), ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা কেন্দ্র ট্রাস্ট, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, উদীচী, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, তারুণ্যের উচ্ছ্বাস, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংগঠন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘শাসন ব্যবস্থার কাঠামো সংস্কার ছাড়া রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার আমরা পাব না। নতুন প্রজন্মকে আহ্বান জানাব আপনারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শাসন ব্যবস্থা কাঠামো সংস্কারের চিন্তাভাবনা করবেন।’

প্রতি বছর বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হলেও এবার সেটা হয়নি।

১৩২ মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা : নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের হাতে ক্রেস্ট, সম্মাননা ও সম্মানি তুলে দেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের সংবর্ধনা দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। 

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজল বারিক, মনিরুল ইসলাম ইউসুফ, ফজল আহমদ, শহীদ আবুল মনসুরের ছোট ভাই ডা. মোহাম্মদ রকিব উল­াহ। উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমা, শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার প্রমুখ।