Logo
Logo
×

সারাদেশ

বিএনপি নেতাদের প্রশ্রয়ে সাবেক মন্ত্রীর পিএসের ঠিকাদারি কাজ চলছে

Icon

আবুল খায়ের, কুমিল্লা

প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪১ এএম

বিএনপি নেতাদের প্রশ্রয়ে সাবেক মন্ত্রীর পিএসের ঠিকাদারি কাজ চলছে

প্রতীকী ছবি

কুমিল্লায় সাবেক এলজিআরডিমন্ত্রী তাজুল ইসলামের পিএস কামাল হোসেনের ১৬৩ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ চলছে বিএনপি নেতাদের প্রশ্রয়ে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় রীতিমতো সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দুদকের মামলায় অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজ কামাল আত্মগোপনে থাকলেও থেমে নেই তার কোনো কর্মকাণ্ড। 

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে ওই দুর্নীতিবাজ টেন্ডারবাজি করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, এলজিইডি ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বড় বড় প্রকল্পগুলো ভাগিয়ে নেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কামাল আত্মগোপনে চলে যান। সম্প্রতি বিএনপির কতিপয় নেতার প্রশ্রয়ে তার থমকে যাওয়া প্রকল্পগুলোর কাজ পুরোদমে চলছে। এদিকে দুদক ওই দুর্নীতিবাজের ব্যাংক হিসাব জব্দ থাকলেও প্রতারণা করে এসব ঠিকাদারি কাজের বিল তুলে নেওয়া হচ্ছে। 

কামাল হোসেনের মেসার্স মাস্টার এন্টারপ্রাইজসহ নামে বেনামে বেশ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বড় বড় প্রকল্প বাগিয়ে নিয়েছেন। সম্প্রতি তার ভাগিনা আতিকুল ইসলামের তদারকিতে ও কতিপয় বিএনপি নেতার প্রশ্রয়ে এসব কাজ শুরু করা হয়েছে। এরই মাঝে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন থেকে ৮ কোটি টাকার চেক তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন এসেছে ওই দুর্নীতিবাজের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দুদকে জব্দ থাকলেও কীভাবে এসব টাকা তিনি তুলে নিচ্ছেন। তাছাড়া স্বশরীরে উপস্থিত না হয়ে ব্যাংক থেকে এত টাকা কীভাবে লেনদেন করা হচ্ছে?

নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে মাস্টার এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রীর পিএস কামাল হোসেনের ৯৪ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের প্রশ্রয়ে এসব কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়েম বলেন, কামাল হোসেনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নগরীতে ৯৪ কোটি টাকার কাজ করছে। ইতঃপূর্বে ৮ কোটি টাকা বিলের চেক নিয়েছে। আমরা অ্যাকাউন্ট পে চেক দিয়েছি। দুদক তার অ্যাকাউন্ট জব্দ করা আছে সেটা শুনেছি। কিন্তু কীভাবে তিনি এসব টাকা নগদায়ন করেন সেটা আমার জানা নেই।

কুমিল্লা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাসরুল্লাহ বলেন, কামাল হোসেনের প্রতিষ্ঠান জেলার দেবিদ্বার পৌরসভায় বিশুদ্ধ পানি শোধানাগার প্রকল্পের ১৪ কোটির একটি কাজ করছে। তবে এ প্রকল্পের কোনো বিল দেওয়া হয়নি। মেঘনা উপজেলায় কামাল হোসেনের মালিকানাধীন চৌধুরী অ্যান্ড মাস্টার এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেঘনার ভাটের চর থেকে উপজেলা সদর পর্যন্ত ১৪ কোটি টাকার কাজ করছে। স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুল হান্নানের প্রশ্রয়ে এ কাজ চলমান রয়েছে। এরই মাঝে প্রাথমিক একটি বিল উত্তোলনের প্রক্রিয়াও চলছে। বিএনপি নেতা আব্দুল হান্নান বলেন, কীভাবে আমরা এই কাজ করছি সেটা আপনার জেনে লাভ নেই। এলজিইডির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা এ কাজ করছি।

এদিকে কামাল হোসেন দাউদকান্দি উপজেলার গাজীপুর গোয়াল মাড়ি লামছড়ি সড়কের ১৬ কোটি টাকা, তিতাস উপজেলার মাছিমপুর এলাকায় ১০ কোটি টাকার একটি সেতু, মনোহরগঞ্জ উপজেলার তগুরিয়া মুন্সিরহাট সড়কসহ কয়েকটি সড়কের ১৫ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে।

কুমিল্লা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদার বলেন, দুদক কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার নির্দেশনা ছাড়া তাদের নামে চেক দেওয়া বন্ধ করা যাবে না। এখন তারা ঠিকাদারি কাজ সম্পন্ন করে বিল নিয়ে যাচ্ছে। তার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা আসতে হবে। তবে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় অভিযুক্ত কামাল হোসেন ও তার ভাগিনা আতিকুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম