বাংলাদেশি কিশোরীকে নিয়ে ভারতে মিথ্যাচার
পঞ্চগড়ে নিন্দা জানালেন বাবা জয়দেব ও মা অনুরাধা
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
পঞ্চগড়ের প্রিয়ন্ত রায় প্রমি (অর্পিতা) নামে এক কিশোরীকে নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাবা-মা। পঞ্চগড়ের জালাসিপাড়া গ্রামের ওই কিশোরী অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ায় বিএসএফের হাতে আটক হন। পরে তাকে সেইফহোমে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে ভারতীয় মিডিয়া প্রচার করছে ইসকন ভক্ত হওয়ায় ওই কিশোরী নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে পালিয়েছেন। যদিও এসব সংবাদে ওই কিশোরীর কোনো বক্তব্য নেই।
বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন চলছে। এ কারণে তারা দেশত্যাগে বাধ্য হচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে এমন মিথ্যাচারে বিব্রত অর্পিতার বাবা-মা ও তার স্বজনরা।
এদিকে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে রোববার পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
অর্পিতার বাবা জয়দেব চন্দ্র রায় ও মা অনুরাধা রানী বলেন, আমরা এখানে হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে বসবাস করছি। আমরা ইসকন ভক্ত না, সনাতনী। ভারতীয় মিডিয়া যা প্রচার করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা শান্তিতে বসবাস করলেও ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারে বিব্রত। পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় শারদীয় দুর্গাপূজা মণ্ডপ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী মনোরঞ্জন বণিক বলেন, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া যা প্রচার করছে তা মিথ্যা বানোয়াট। বর্তমান সময়ে আমরা নিরাপদে আছি, ভালো আছি। বরং শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিশ্বজিতকে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল কিন্তু আমরা কোনো প্রতিবাদ করতে পারিনি। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে এবং বাংলাদেশের সম্মান বিশ্বের কাছে কমাতে ভারতীয় গণমাধ্যম এমন মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া সংবাদ প্রচার করছে।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ৯ ডিসেম্বর রাতে অবৈধপথে ভারতে প্রবেশের পর বিএসএফের হাতে আটক হয়েছেন ওই কিশোরী। দেশে চলমান ইসকন ইস্যুকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে ভারতীয় কিছু মিডিয়া তাকে নিয়ে মিথ্যাচার করছে। তিনি বলেন, ওই কিশোরীর চোখের সমস্যা থাকায় ভারতে ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল। ভিসা না পেয়ে সোমবার পরিবারকে না জানিয়ে মামাবাড়ি ভারতে চলে যায় ওই কিশোরী। একপর্যায়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে সে বিএসএফের হাতে আটক হয়। তাকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া থানায় তাকে নিয়ে যায় বিএসএফ। পরে থানা থেকে তাকে আদালতের নির্দেশে সেফহোমে নেওয়া হয়। তাকে নির্যাতনের কোনো ঘটনা না ঘটলেও ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যম অপপ্রচার চালাচ্ছে। মূলত চিকিৎসার জন্য ভিসা না পেয়ে ওই কিশোরী অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে আটক হয়েছে।