‘বাংলাদেশকে অস্থিতিশীলের চেষ্টা করলে সে দেশকে খান খান করে দেওয়া হবে’
কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫১ পিএম
কোনো দেশ বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে সেই দেশের মানচিত্রকে ভেঙ্গে খান খান করে দেওয়া হবে। এখনো ফ্যাসিস্টের দালালেরা দেশে বসে এবং দেশের বাইরে দিল্লিতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা এ দেশে অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে উসকানি দিয়ে একটি সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এ দেশের ধর্মপ্রাণ হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা একইসঙ্গে একই টেবিলে খাবার খায়, একইসঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যায়, একইসঙ্গে কেনাকাটা করেন। সেই সমাজে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে দাঙ্গা লাগানো সহজ নয় বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ।
তিনি শনিবার রাতে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে ওয়েস্টব্যাঙ্ক কলেজ আয়োজিত ‘মেহফিল এ ইনকিলাব’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বের জন্য, তাদের নিজস্ব হিস্যার জন্য, তাদের অধিকারের জন্য, জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষার জন্য যেমন জীবন দিতে পারে, তেমনি জীবন কেড়েও নিতে পারে। ফ্যাসিবাদের দোসররা আবার তাদের চেহারা দেখাচ্ছে, তারা সমাজের মূল অংশের সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু যেসব রাজনৈতিক দল ওই সব সন্ত্রাসীদের, সন্ত্রাসের ইন্ধনদাতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, তাদেরকে বলব আপনাদের পরিণামও আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার মতোই হবে।
হান্নান মাসউদ বলেন, এখন ভেবেছেন ক্ষমতায় চলে গেছেন, যা ইচ্ছে তাই করছেন, আপনাদের বাধা দেওয়ার কেউ নেই। ৫ আগস্টের আগে ৩ আগস্ট, ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগও একই কথা ভেবেছিল। তারা একই কথা ভেবে রাজপথে নেমে আমাদের ভাইদেরকে গুলি করেছিল, হামলা করেছিল। তারা কিন্তু টিকতে পারেনি। দুই দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব, ওবায়দুল কাদের থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারকেও পালাতে হয়েছে। পরিণাম কত ভয়াবহ। তাদের পরিণামের দিকে খেয়াল রাখুন।
হান্নান মাসউদ ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা দিল্লিতে বসে এ দেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে, তারা ভাবছেন এ দেশ শেখ হাসিনার, শেখ মুজিবের। কিন্তু তারা ভুলে যায়- এ দেশ শহিদ তিতুমীরের দেশ, এ দেশ হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীর দেশ, এ দেশ মেজর জিয়ার দেশ, এ দেশ আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর দেশ, এ দেশ জুনায়েদ বাবুনগরীর দেশ। তারা ভুলে যায় এ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য কতজন হাসিমুখে জীবন দিয়েছেন, ফাঁসির রশি গলায় পরেছেন। তারা ভুলে যায়, এ দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বেগম জিয়া থেকে শুরু করে মতিউর রহমান নিজামী পর্যন্ত অনেকেই দীর্ঘদিন কারাবরণ করেছেন, অনেকে আবার শহিদ হয়েছেন।
উপকূলীয় এ জনপদে সাড়া জাগানো দুদিন ব্যাপী ‘মেহফিল এ ইনকিলাব’ অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বক্তব্য রাখেন ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রহিম, কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিউল হোসেন ওয়াসিম, কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক হাফিজুর রহমান, নোয়াখালী জেলা সমন্বয়ক আরিফুর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইসহাক খন্দকার, উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ বেলায়াত হোসেন, সেক্রেটারি মাওলানা মিজানুর রহমান, বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের আমির মাওলানা মোশারফ হোসেন, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নুরুল আলম সিকদার, সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন, নোয়াখালী জেলা দক্ষিণ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি হেদায়েত উল্যাহ মাসুদসহ সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতারা।