Logo
Logo
×

সারাদেশ

পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ব্রিজ থেকে লাফিয়ে পড়ে জাসদ নেতার ভাইয়ের মুত্যু

Icon

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ পিএম

পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ব্রিজ থেকে লাফিয়ে পড়ে জাসদ নেতার ভাইয়ের মুত্যু

মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক হওয়ার পর ব্রিজ থেকে লাফিয়ে পড়ে জাসদ নেতার ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় অগ্নিগর্ভ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা এখন শান্ত। অবরুদ্ধ ৩ পুলিশ সদস্যকে সাড়ে ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছেন বিজিবির সদস্যরা।

গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে তাদের ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে এবং নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক ২টি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। 

স্থানীয়রা জানিয়েছে, নিহতের নাম রফিকুল ইসলাম দুদু (৪৫)। সে চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাকের ছোট ভাই এবং ওই এলাকার আজিজ মন্ডলের পুত্র। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে চাঁদগ্রাম ৪নং ব্রিজের সন্নিকটে একটি চায়ের দোকানদারি করার পাশাপাশি গোপনে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। 

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভেড়ামারা থানা পুলিশের এসআই সালাউদ্দীন ৬ সদস্যের একটি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওই মাদক ব্যবসায়ীকে আটকের জন্য অভিযান চালায়। মাদক ট্যাপেন্ডলসহ তাকে হাতেনাতে আটকও করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে সে ব্রিজ থেকে লাফ দেয়। পুলিশ সেখানেও ধাওয়া করে তাকে আটক করে। এ সময় ধস্তাধস্তার একপর্যায়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জাসদ নেতাকর্মীরা পুলিশের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে, এমন অভিযোগ এনে পুলিশকে ধাওয়া দেয়। এর মধ্যে ৩ জনকে ধরে ফেলে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এরপর আটকিয়ে রাখা হয় জাসদ অফিসে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশ সদস্য এখলাছ উদ্দীনের ব্যবহৃত এফ জেড ফিজার মোটরসাইকেলটি। গুরুতর আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- এসআই সালাউদ্দীন (৩২), কনস্টেবল এখলাছ উদ্দীন (৩০), কনস্টেবল মিজানুর রহমান (২৮)।

ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, চায়ের দোকানদারির আড়ালে রফিকুল ইসলাম দুদু দীর্ঘদিন মাদক ট্যাপেন্ডলের ব্যবসা করে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই সংবাদ নিশ্চিত হয়ে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। আটকও করা হয়। তার পর সে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ব্রিজ থেকে লাফ দেয়। পুলিশও তাকে ধাওয়া দিয়ে আবারও আটক করে এবং ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সে অসুস্থ অনুভব করলে, তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়। এ সময় সে মারা যায়। এরপর বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে হামলা চালায়। অবরুদ্ধ করে রাখে এবং পুলিশের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।

তিনি আরও জানান, ৩ পুলিশ সদস্যকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

চাঁদ্রগাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জানবার হোসেন জানিয়েছেন, নিহত রফিকুল ইসলাম দুদু চায়ের দোকানদারের পাশাপাশি নিষিদ্ধ মাদক ব্যবসায়ী হিসাবে এলাকায় পরিচিত। আওয়ামী লীগ ও জাসদ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাবস্থায় এলাকার মানুষ মুখ না খুললেও দুদু একজন মাদক ব্যবসায়ী তা এখন সবার মুখে মুখে। 

নিহত রফিকুল ইসলাম দুদুর বড় ভাই ও চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক দাবি করে জানিয়েছেন, নিহত দুদু একজন চায়ের দোকানদার। তার বিরুদ্ধে কোনো মাদক মামলা নেই। সে মাদকের সঙ্গে জড়িতও না। পুলিশ অন্যায়ভাবে তাকে আটক করতে এসে হত্যা করেছে। এ বিষয়ে ৬ পুলিশকে আসামি করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম