মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুল। যিনি গত ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছেন।

এমপি, এনএসআই, ডিজিএফআইসহ বিভিন্ন তদবিরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ চিনিকলে শ্রমিক নিয়োগ দিতেন শ্রমিক নেতা গোলাম রসুল। এই প্রতিবেদকের হাতে আসা একটি ভিডিওতে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। 

ভিডিওতে দেখা গেছে, মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ক্যান্টিনের পাশের টিনের ছাউনি দেওয়া একটি গোলঘরে বসে তিনি শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছেন। সেখানে সাবেক কাউন্সিলর মেহেদী হাসান সজলকেও দেখা গেছে।

১ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে গোলাম রসুল বলেন, কত জায়গা মেইন-টেইন করতে হয়, হেড অফিসের তালি-ই নেই। ১০১টা লোক। এবার ভাগ করো এমপি ৫০টা চলে গেল। এরা চলে গেল ১৭টা। তাহলে কয়টা থাকে? ৩৪টার মধ্যে আমার ইউনিয়নে ১৫টা বাদ দেও। এবার থাকে ২০টা। এবার এসো এনএসআই, ডিজিএফআইসহ প্রশাসনিক তদবিরে গেছে ৩টা। হেড অফিসে গেছে ৫টা। পাশ থেকে একজন বলেন- তাহলে তো আপনার থাকছেই না। উত্তরে গোলাম রসুল বলেন, আমি ওইটুকুর উপরে দাঁড়িয়ে আছি।   

তিনি বলেন, অথচ অন্য নেতারা হলে এমপির ১০টা দিয়ে এদিকে মেইন-টেইন করে চালিয়ে চলে যেত। এজন্য কালকে আমি এমপির বলেই ফেলিলাম যে অনেক তেল হয়ে গিয়েছে। এরপর যদি বেশি চাপাচাপি করে তাহলে আমি নিয়োগ বন্ধ করে দেব। আমার আর এক বছরই আছে, আমি ওভারটাইম দিয়ে চালিয়ে যাব। আমি তো ওভারটাইম বন্ধ করে দিয়ে অনেক মেকানিজম করে কাজটা করলাম। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রমিক নেতা গোলাম রসুল ছিলেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের বন্ধু। এমপি বন্ধুর প্রভাব খাটিয়ে তিনি হয়েছেন বিপুল সম্পদের মালিক। তার মতের বাইরে গেলেই শ্রমিকদের কপালে নেমে আসত নির্যাতনের খড়্গ। 

মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ক্যান্টিনের পাশের এই গোলঘর রীতিমতো টর্চার সেলে পরিণত করেছিলেন। টানা দুইবার বিনা ভোটে শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হয়েছেন তিনি। 

তার বিরুদ্ধে ২৪ জন সিডিএর কাছ থেকে পদোন্নতির নামে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে; যা চিনিকলটির হেড অফিস তদন্ত করছে। 

এ ব্যাপারে জানতে গোলাম রসুলের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপক সাইফুল আলম বলেন, শ্রমিক নিয়োগে টাকা লেনদেনের বিষয়ে গোলাম রসুলের নামে ২৪টি অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলো তদন্ত করা হয়েছে; কিন্তু এসব লেনদেনে আমরা জড়িত না।