বিয়ের দাবিতে অনশনের নাটক, সোয়া তিন লাখ টাকায় রফা
গোসাইরহাট (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ পিএম
শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে দিন দিন বেড়েই চলছে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন ঘটনা। চলতি বছর এ উপজেলায় এ পর্যন্ত ৬টি ঘটনা ঘটেছে।
প্রেম কিংবা পরকীয়া সম্পর্কের জেরে এসব নারী আর তরুণীদের বেশির ভাগেরই অভিযোগ ছিল- বিয়ের প্রলোভনে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তাদের সর্বস্ব লুট করা হয়েছে। এমন গুরুতর অভিযোগ তোলার পর অজ্ঞাত কারণে বেশির ভাগ নারীই আইনি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ফিরে গিয়েছেন বাড়িতে। দুই-একটা বিয়ে হলেও বিয়ের কয়েক দিন পরেই মোটা অংকের দেনমোহর নিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনাও ঘটেছে।
সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা ঘটেছে গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের নাগেরপাড়া গ্রামে। ওই গ্রামের জনৈক নেছার হাওলদারের ছেলে সাগর হোসেন (২৫) নামে এক তরুণের বাড়িতে আকস্মিক চলে আসেন পার্শ্ববর্তী বাড়ির এক তরুণী (১৭)। বিয়ের দাবিতে সাগরের বাড়িতে এক নারী মা খালা নানিসহ উঠেছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত উৎসুক জনতা সাগরের বাড়িতে ভিড় জমান এবং পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সাগরসহ তার পরিবারের লোকজন পাঁচ দিন ধরে নিজ বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করেন। শেষপর্যন্ত বিষয়টি থানা পর্যন্ত পৌঁছায়। অবশেষে বুধবার বিকালে ওই তরুণী হাসতে হাসতে তার বাবার বাড়িতে ফিরে যান।
প্রায় ৫ দিন অনশন নাটকীয়তায় ওই তরুণী স্থানীয়দের জানিয়েছিলেন, তার প্রেমিক সাগরের বিয়ের আশ্বাসে ওই মেয়ে আগের স্বামীর সংসার ছেড়েছেন। তাকে বিয়ে না করলে সাগরের বাড়িতেই তিনি আত্মহত্যা করবেন। সেখানে পাঁচ দিন পরেই রহস্যজনক কারণে নীরবে ফিরে গেলেন তার বাবার বাড়িতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের দাবিতে অনশনে নামা ওই তরুণী তার কথিত প্রেমিক এবং তার পরিবারের সঙ্গে বিয়ে বা মামলা না করার শর্তে স্থানীয় কিছু সালিশকারকদের সহায়তায় সোয়া তিন লাখ টাকার রফাদফায় তার বাবার বাড়িতে ফিরে গেছেন।
একের পর এক এসব ঘটনায় শান্তিকামী গ্রামবাসী এবং সচেতনমহল উদ্বিগ্ন। তাদের অভিমত এমন ঘটনা কঠোর হস্তে প্রতিরোধ করা না গেলে এক শ্রেণির মানুষ অনৈতিক সুবিধা আদায়ের নেশায় আরও মেতে উঠবে। যার প্রভাব পড়বে সমাজের নিরীহ মানুষের ওপর। বর্তমানে ওই তরুণীর পরিবার কিংবা তার কথিত প্রেমিকের পরিবার আর কেউ মুখ খুলছেন না।
এ বিষয়ে গোসাইরহাট থানার ওসি মো. মাকসুদ আলম বলেন, প্রেমিকের বাড়িতে ওই তরুণীর অনশন করার খবর পেয়ে গোসাইরহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। শুনেছি স্থানীয়দের মাধ্যমে মীমাংসা হয়েছে; আজকে অনশন বন্ধ করে ওই তরুণী চলে যাবে।