বড়ছড়া শুল্ক স্টেশনে ভারতীয় লং রেঞ্জ শুটিং রাইফেলসসহ গ্রেফতার ৩
যুগান্তর প্রতিবেদন, তাহিরপুর
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১১ পিএম
সীমান্তের বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে কয়লা আমদানিকারকের ডিপোতে থাকা অফিস কক্ষ থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ভারতীয় লং রেঞ্জ শুটিং রাইফেলসসহ (স্নাইপার) তিনজনকে গ্রেফতার করেছে বর্ডার বিজিবি।
শুক্রবার দুপুরে তাহিরপুরের টেকেরঘাট বিজিবির কোম্পানি হেডকোয়ার্টারের একটি টহল দল বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে এক কয়লা আমদানিকারকের ডিপোতে থাকা অফিস কক্ষ থেকে ওই তিনজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত গ্রাম টেকেরঘাটের বড়ছড়ার আবুল মিয়া ওরফে আবুল মেকারের ছেলে রাজু, একই উপজেলার একই গ্রামের আলতু মিয়ার ছেলে জালাল মিয়া, নুর আহমদের ছেলে রাসেল মিয়া।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ২৮ বিজিবির সুনামগঞ্জের অধিনায়ক লে. কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির যুগান্তরকে অস্ত্রসহ তিনজনকে গ্রেফতারের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
শুক্রবার বিকালে উপজেলার বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে থাকা মেসার্স শামীম ট্রেডার্স নামক কয়লা-চুনাপাথর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের লেদারবন্দ গ্রামের আফছার উদ্দিনের ডিপোতে থাকা অফিস কক্ষ থেকে অস্ত্রসহ ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে বিজিবি।
তবে আফছার উদ্দিনের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রতিষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আফছার উদ্দিনের ছেলে শামীম যুগান্তরকে জানান, যে অফিস কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে সেটি ভাড়াকৃত জায়গায়। তবে আমরা কয়েক বছর ধরে ওই ডিপোতে আমদানিকৃত কয়লা-চুনাপাথর মজুত করিনি। এটি একপ্রকার পতিত ডিপো বা অফিস বলা যায়। অস্ত্রসহ তিনজন গ্রেফতারের বিষয়টি তিনি লোকমুখে জেনেছেন বলেও জানান।
রাত ৮টায় বিজিবির ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে বিজিবির সিলেট সেক্টরের দায়িত্বশীল অফিসার যুগান্তরকে জানান, আপাতত যে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে সেই অস্ত্রের গায়ে মেইড ইন ইন্ডিয়া লেখা রয়েছে। অস্ত্রটি মূলত লং রেঞ্জ রাইফেলস। অস্ত্রের সঙ্গে অপটিক্যাল ল্যান্স ও অস্ত্রটি সেট করার উপকার পাওয়া গেছে। এ ধরনের অস্ত্র মূলত প্রাণঘাতী অস্ত্রের সঙ্গে জুড়ে থাকা অপটিক্যাল লেন্স দূরে থাকা টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে শব্দহীনভাবে শুট করে আক্রমণ করার কাজে সন্ত্রাসীরা বহি:বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহার করে থাকে।
বিজিবির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানান, কয়েক মামলায় সদ্য সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে জামিনে বেড়িয়ে আসা অপর এক ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসী সীমান্তের ওপার ভারত থেকে অস্ত্রটি সংগ্রহ করে অন্য কোনো চক্রের কাছে বিক্রয় বা হস্তান্তরের জন্য।
শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার আফম আনোয়ার হোসেন খান যুগান্তরকে জানান, অস্ত্রসহ গ্রেফতারকৃতদের থানায় সোপর্দ করে বিজিবি মামলা দায়ের করার পর এ মামলাটি নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে অস্ত্রের ধরন, অস্ত্রের উৎস ও অস্ত্রটি কোনো চক্রের কাছে বিক্রয় কিংবা হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছিল কিনা? তা জানা যাবে।
প্রেস বিফিংকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সিলেট সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরীসহ বিজিবি সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বশীল অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন।