বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত দর্জি শিমুল মন্ডল মতির (৪৪) লাশ ১২৩ দিন পর কবর থেকে তোলা হলো।
আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তাসওয়ার তানজামুল হকের উপস্থিতিতে শহরের নামাজগড় আঞ্জুমান-ই গোরস্থানের কবর থেকে লাশ তোলা হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এসআই তয়ন কুমার মন্ডল জানান, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে যথাযথ মর্যাদায় পুনরায় দাফন করা হয়েছে। এ সময় ভিকটিমের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ ও এজাহার সূত্র জানায়, দর্জি শ্রমিক শিমুল মন্ডল মতি বগুড়া শহরের দক্ষিণ বৃন্দাবনপাড়ার মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে গত ৪ আগস্ট সকালে মিছিলে অংশ নেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের বড়গোলা হতে কাঁঠালতলা রাস্তায় পৌঁছলে আসামিদের ছোড়া গুলি, ককটেল ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন। তাকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
কোটাবিরোধী আন্দোলনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করায় নিহত মতির লাশ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই জানাজা শেষে লাশ শহরের নামাজগড় আঞ্জুমান-ই গোরস্থানে দাফন করা হয়।
এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী শিমু বেগম গত ২৭ আগস্ট সদর থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ৫৩৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
এজাহারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ছাড়াও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতা এবং তিন সাংবাদিককে আসামি করা হয়।
সাংবাদিকরা হলেন- দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার মাহমুদুল আলম নয়ন, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান হাসিবুর রহমান ও দৈনিক কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি জেএম রউফ।
বগুড়ার কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন জানান, শিমুল মন্ডল মতি হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তয়ন মন্ডল নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণে লাশ তোলার সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি গত ২৭ অক্টোবর বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। ম্যাজিস্ট্রেট সুকান্ত সাহা গত ৩১ অক্টোবর আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত এ মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদৎ আলম ঝুনু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা ও আবদুস সবুর খান নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর মধ্যে শাহাদৎ আলম ঝুনু হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ঢাকায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়ার পথে গত ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি সিরাজগঞ্জে মারা যান।