খুবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শ্রমিকদের ব্যাপক সংঘর্ষ, বাস চলাচল বন্ধ

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৮ এএম

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে পালটাপালটি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মারধর ও শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে নগরীর সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল মোড় অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনার পর থেকে আশেপাশের দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের স্লোগানে এলাকা কম্পিত হয়ে উঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি সেনা ও নৌ সদস্য দায়িত্ব পালন করে।
শিক্ষার্থীরা জানান, গোপালগঞ্জ থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অসুস্থ এক ছাত্র রাজীব পরিবহণে খুলনায় আসছিল। বাসে সিট দেওয়ার কথা বলে সুপারভাইজার ও হেলপার তাকে বাসে তোলেন। কিন্তু সিট না দেওয়ায় তাদের সঙ্গে ওই ছাত্রের কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পরিবহণ শ্রমিকরা তাকে মারধর করে।
এ ঘটনা শুনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে যান। তখন পরিবহণ শ্রমিকরা শিক্ষার্থীদের মারধর ও শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করে। খবর পেয়ে খুবির শিক্ষার্থীরা সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে পৌঁছালে পরিবহণ শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন।
এ সময় কয়েকটি বাস ও পরিবহণ কাউন্টার ভাঙচুর হয়েছে বলে পরিবহণ শ্রমিকরা জানায়। এরপর সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নৌ-বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে যায়।
তারা আরও জানান, অবিলম্বে ছাত্রদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার, অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শনকারীদের অস্ত্রসহ গ্রেফতার, রাজীব পরিবহণ বন্ধ ঘোষণা এবং বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ছাত্ররা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
খুবির ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজমুস সাদাত জানান, পরিবহণ শ্রমিকদের হামলায় তাদের ১০/১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এদিকে, বাস টার্মিনালে এখনো সেনাবাহিনী ও নৌ-বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন। তবে বাস চলাচল শুরু হয়নি।
খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহিদ খান জানান, তাদের কোনো দাবি-দাওয়া নেই। তারা শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের চেষ্টা করবেন।
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) হাওলাদার সানওয়ার মাসুম বলেন, রাজীব পরিবহণে খুবির একজন ছাত্র খুলনায় আসছিলেন। তাকে পরিবহণের সদস্যরা বসার সিট দেয়নি। পরিবহণের সদস্যরা তাকে খুবির সামনে না নামিয়ে দিয়ে তাকে বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে খুবির ছাত্ররা তাকে ছাড়িয়ে নিতে বাসস্ট্যান্ডে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।