হঠাৎ দেবে গেল নদীর তীর, বিলুপ্তের পথে দেড়শ বছরের মাজার
মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
বরিশালের মুলাদীতে স্রোত নেই নয়াভাঙনী নদীতে। দীর্ঘদিন ধরে চলছে না ভারি নৌযান। তবুও মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ দেবে গেছে নদী তীরের প্রায় পাঁচশ ফুট জায়গা। উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের দক্ষিণ পূর্ব কাজিরচর গ্রামের আইনুদ্দীন শাহ মাজার এলাকা দেবে যায়। এতে প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো আইনুদ্দীন শাহের মাজার ও শতবর্ষী মেলা বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নয়াভাঙনী নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে ওই এলাকার শতাধিক পরিবার।
দক্ষিণ পূর্ব কাজিরচর গ্রামের আমিন উদ্দীন ব্যাপারী বলেন, সোমবার বিকাল পর্যন্ত আইনুদ্দীন শাহ মাজার এলাকা ভাঙনের চিহ্ন দেখা যায়নি। মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ করেই প্রায় পাঁচশ ফুট জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এভাবে ভাঙন দেখা দেওয়ায় নদী তীর এলাকার শতাধিক পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবার বাড়ি-ঘর সরিয়ে নিয়েছেন।
ওই এলাকার সত্তরোর্ধ ফজল হাওলাদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নয়াভাঙনী নদী দিয়ে লঞ্চ, জাহাজ, কার্গো চলাচল করে না। নদীতে বর্ষা মৌসুম ছাড়া তেমন একটা স্রোত দেখা যায় না। এরপরও প্রতিনিয়ত নদী ভাঙছে। কয়েকদল বালু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙন রোধ হচ্ছে না। একসঙ্গে বিশাল এলাকা নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়তি আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এভাবে ভাঙনের মুখে পড়লে বাড়ি-ঘর সরিয়ে নেওয়ারও সুযোগ থাকে না।
আইনুদ্দীন শাহ মাজারের খাদেম ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, আইনুদ্দীন শাহের মাজার প্রায় দেড়শ বছরের। সেখানে প্রায় ১৪০ বছর ধরে ভক্তরা মেলা করছেন। নদীতে ভেঙে যাওয়ায় মাজারের অনেকাংশ ভেঙে গেছে। প্রায় পাঁচশ ফুট দেবে যাওয়ায় মেলা বসানো নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. মন্টু বিশ্বাস জানান, নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলায় ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না। বালু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, নয়াভাঙনী নদীতে অভিযান চালিয়ে একাধিকবার ড্রেজার জব্দ, বালু ব্যবসায়ীদের জরিমানা ও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।