নারী দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুক্তিপণ আদায়
ফরিদপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৩ পিএম
ফরিদপুরের সদরপুরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নারী দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিত্তবান ব্যক্তিদের জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি একাধিক ব্যক্তিকে প্রেমের ফাঁদের ফেলে নিঃস্ব করেছে।
কিছুদিন আগে এই চক্রটির খপ্পরে পড়েন সদরপুরের মুজাহিদ মৃধা নামের এক ব্যক্তি। পরবর্তীতে তিনি বাদী হয়ে সদরপুর থানায় ৯ জনসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, মোবাইল ফোনে রং নম্বরে অজ্ঞাতপরিচয় এক মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় মুজাহিদ মৃধার। তাদের মধ্যে কয়েক দিন মোবাইল ফোনে কথাবার্তা চলতে থাকে। একপর্যায়ে অজ্ঞাতপরিচয় মেয়েটি তাকে ফোন দিয়ে উপজেলার বাইশরশি পরিত্যক্ত জমিদার বাড়িতে আসতে বলে। তিনি সরল বিশ্বাসে ওই স্থানে যাওয়ার পর মেয়েটি তাকে অটোবাইকে উঠতে বলে।
অটোবাইকে ঘোরাফেরার একপর্যায়ে ওই মেয়েটি কৌশলে পূর্ব শৌলডুবী এলাকার সাবেক মেম্বার শেখ ফারুকের বাড়িতে একটি টিনের ঘরে নিয়ে মুজাহিদকে আটক করে। এরপর ওই চক্রের কয়েক ব্যক্তি মুজাহিদকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং প্রাণনাশের ভয় দেখায়। পরে তার কাছ থেকে কয়েক দফায় মুক্তিপণ বাবদ ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে জোর করে ৪টি সাদা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নেয়। বিষয়টি মুজাহিদের স্বজনরা জানতে পেরে স্থানীয় লোকজনদের নিয়ে রাতে ফারুক মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে সোহরাব খালাসি নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে এবং মুজাহিদকে উদ্ধার করেন। ওই সময় চক্রের অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়।
বিষয়টি সদরপুর থানা পুলিশকে অবহিত করলে তারা সোহরাব খালাসিকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজনের নাম-ঠিকানা জানতে পারে। এ মামলায় ইতোমধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি শেখ ফারুক মেম্বারের স্ত্রী রেনু বেগম, লিমা আক্তার এবং মো. রবিনসহ অজ্ঞাতপরিচয় একজনকে গ্রেফতার করে ফরিদপুর জেলহাজতে প্রেরণ করে সদরপুর থানা পুলিশ।
চক্রের বিষয়ে এলাকার লোকজন জানান, এই চক্রকে যদি দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় না আনা হয় তবে আরও বহু ব্যক্তি এই চক্রের খপ্পরে পরে নিজের সর্বস্ব হারিয়ে ফেলবে।
ওই মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা এসআই তানভীর জানান, অভিযান চালানোর জন্য ফোর্সের সংকট রয়েছে, তাই বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে একটু সময় লাগছে।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোতালেব বলেন, এ মামলায় ইতোমধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।