ইসকনের পক্ষে ফেসবুকে পোস্ট, সেই কর্মকর্তার বদলিতে মিষ্টি বিতরণ
কালকিনি-ডাসার (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২৪ পিএম
মাদারীপুরের কালকিনিতে ইসকনের পক্ষে ফেসবুকে পোস্ট করা সেই বিতর্কিত সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদারকে বদলি করা হয়েছে। ওই কর্মকর্তার বদলির খবরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণের খবর পাওয়া গেছে।
তবে সন্দীপনের বিরুদ্ধে ইসকনের কর্মকাণ্ডের পক্ষে তার নিজ নামে ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস ও একই উপজেলায় প্রায় সাত বছরের চাকরি জীবনে তার কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগে তাকে বদলি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে ওই কর্মকর্তার বদলির আদেশ হয়েছেন বলে মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কর্তৃপক্ষ।
মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর কালকিনিতে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন সন্দীপন মজুমদার। একই স্থানে কোনো কর্মকর্তা তিন বছরের বেশি সময় চাকরি করার ব্যাপারে বিধান থাকলেও তিনি নিয়ম-নীতিকে তোয়াক্কা না করে ওপর মহলকে ম্যানেজ করে প্রায় ৭ বছর যাবত একই উপজেলায় দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এ সুযোগে তিনি জাটকা শিকার বন্ধকালীন সরকারি খাদ্য সহায়তা হিসেবে প্রতি মাসে জেলেপ্রতি ভিজিএফের চাল বিতরণের তালিকা তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে পোনা বিতরণ এবং দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে ছাগল ও ছাগলের জন্য ঘর বিতরণের ঘটনায় ব্যাপক অনিয়ম করে আসছিলেন। তার এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
গত ২৬ নভেম্বর ইসকনের কর্মকাণ্ডের পক্ষে সন্দীপন তার নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এ নিয়ে আলেম সমাজসহ স্থানীয় সাধারণ জনগণের মাঝে চরম সমালোচনা সৃষ্টি হয়। এ বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি যুগান্তর অনলাইনে ‘ইসকনের পক্ষে মৎস্য কর্মকর্তার পোস্ট সমালোচনার ঝড়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনটি সবার নজরে এলে অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে থেকে কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন।
এ ঘটনার পর মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জিল্লুর রহমানের গত ১ ডিসেম্বর তারিখের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তার বদলির আদেশ প্রদান করা হয়। তার বদলির খবরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ করেছেন স্থানীয় সাধারণ জনগণ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, বিতর্কিত মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদারের সাত বছরের কর্মকাণ্ড ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তার বদলি হয়েছে তাই আমরা মিষ্টি বিতরণ করছি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. হাদিউজ্জামান বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জিল্লুর রহমান (স্যারের) ১ ডিসেম্বর তারিখের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সন্দীপনের বদলির আদেশ প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ বলেন, ইসকনের কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্দীপন তার নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এ নিয়ে আলেম সমাজসহ স্থানীয় লোকজনের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে মৎস্য কর্মকর্তার বিষয়টি আমি কর্তৃপক্ষকে অবগত করি। তবে তার বদলির আদেশ প্রদান করা হয়েছে বলে আমাকে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বর্তমানে এলাকা শান্ত রয়েছে।