সিরাজগঞ্জের অন্তরার প্রেমে মত্ত চীনের চেংনাং, পেতেছেন সংসার
বেলকুচি-চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৮ পিএম
প্রেম কোনো সীমানা মানে না। এমনই এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন চীনের নাগরিক চেংনাং এবং সিরাজগঞ্জের অন্তরা খাতুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হওয়া তাদের পরিচয় এখন পরিণত হয়েছে একটি আন্তঃদেশীয় দাম্পত্য সম্পর্কে।
সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বিয়ারা গ্রামে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়। অন্তরা ও চেংনাং তাদের গল্প শেয়ার করেন, যা শুরু হয় গাজীপুরের একটি রেস্টুরেন্টে।
অন্তরা খাতুন (২৭) গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। কয়েক বছর আগে বাবা-মায়ের পছন্দে তার প্রথম বিয়ে হয়েছিল। সেই সংসারে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে, যার বয়স নয় বছর। তবে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ডিভোর্স হয় এবং সন্তানকে নিয়ে তিনি গাজীপুরে কাজ শুরু করেন। চার মাস আগে একদিন সন্তানকে নিয়ে একটি রেস্টুরেন্টে গেলে চেংনাংয়ের সঙ্গে তার দেখা হয়। চেংনাং তখন গাজীপুরে অবস্থান করছিলেন এবং সেখানে রেস্টুরেন্টে তিনি অন্তরাকে দেখে মুগ্ধ হন।
সেই রেস্টুরেন্টে দেখা হওয়ার পর তারা একে অপরের সঙ্গে ফেসবুকে যুক্ত হন এবং মোবাইল নম্বর বিনিময় করেন। এরপর ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।
চেংনাং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং দুই পরিবারের সম্মতিতে গত ২২ নভেম্বর গাজীপুর কোর্টে গিয়ে হলফনামার মাধ্যমে তারা বিয়ে করেন। চেংনাং নিজের নাম পরিবর্তন না করলেও তিনি মুসলিম রীতিনীতি গ্রহণ করেছেন।
গত শনিবার অন্তরা তার স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি সিরাজগঞ্জের বিয়ারা গ্রামে আসেন।
অন্তরার বাবা জানান, মেয়ের পছন্দের এই বিয়েতে তিনি রাজি হয়েছেন এবং জামাইকে তাদের বাড়িতে স্বাগত জানিয়েছেন।
দম্পতির ভাষাগত সমস্যা থাকলেও তা তাদের সম্পর্কের বাধা হতে পারেনি। বর্তমানে চেংনাং বাংলা শিখছেন এবং অন্তরা চায়না ভাষা শেখার চেষ্টা করছেন। তাদের কথোপকথন এখনো ট্রান্সলেটারের মাধ্যমে হয়।
চেংনাং বলেন, আমার বাড়ি চীনের হুনান প্রদেশে। অন্তরাকে দেখে আমার ভালো লাগে। আমরা একসঙ্গে সময় কাটাই এবং পরে বিয়ে করি। শিগগিরই আমি অন্তরাকে নিয়ে চীনে যাব।
এই দম্পতি জানান, তারা একে অপরের সংস্কৃতি এবং ভাষা শিখতে আগ্রহী। তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং ভালোবাসার মধ্য দিয়ে তারা একটি নতুন জীবনের সূচনা করছেন।
এই গল্পটি আবারও প্রমাণ করে যে ভালোবাসা মানুষকে সংস্কৃতি, ভাষা, এমনকি দেশের সীমানার ঊর্ধ্বে নিয়ে যেতে পারে।