দুই কোটির ব্রিজে উঠতে হয় বাঁশ-কাঠের মই দিয়ে
কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০২ পিএম
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কাদিরখিল-প্রসন্নকাপ সুন্দরী খালে নির্মিত ব্রিজে উঠতে হয় বাঁশ ও কাঠের তৈরি মই দিয়ে। ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় জনগুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ জনগণের কোনো কাজেই আসছে না।
এই এলাকায় কোনো ব্রিজ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার হতো, কিন্তু নৌকাযুগের ভোগান্তি দূর করতে তৈরি হয়েছে একটি ব্রিজ; কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় নবনির্মিত সেতুটি জনগণের কোনো কাজে আসছে না। দুইপাড়ের লোকজন বাঁশ-কাঠের মই লাগিয়ে ব্রিজে উঠে পারাপার হচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৫নং পশ্চিম সহদেবপুর ইউনিয়নের কাদিরখিল-প্রসন্নকাপ গ্রামের খালের ওপর ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। বছর খানেক আগে ঠিকাদার ব্রিজ নির্মাণ সম্পন্ন করলেও সংযোগ সড়ক না করায় ওই ইউনিয়নের কাদিরখিল, মালচোয়া, শাসনপাড়া, তারাবাড়িয়া, প্রসন্নকাপ, তুলপাই, কান্দিরপাড়, চারটভাঙ্গা, সেঙ্গুয়া গ্রামসহ প্রায় ১০টি গ্রামের শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষকে বাঁশের মই দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজ দিয়ে পাড় হতে হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন পর এ স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু ব্রিজ নির্মাণ হলেও কোনো কাজে আসছে না। কারণ ব্রিজের দুপাশের কোনো মাটি নেই, যার কারণে ব্রিজ থেকে নামতে বা উঠতে বাঁশের মই ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে আমার কষ্টের শিকার হচ্ছি। কয়েকদিন আগে বৃদ্ধ নারী ব্রিজে উঠতে আকস্মিক ভাবে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। তাই দ্রুত ব্রিজের দুপাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানাই।
শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতিদিন এ ব্রিজ দিয়ে আমরা যাতায়াত করি কিন্তু ব্রিজে উঠতে ও নামতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। কয়েক বার পরে আমরা মারাত্মক ব্যথা পেয়েছি। আমরা চাই অচিরেই ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হোক।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন জানান, ব্রিজের নির্মাণ কাজ প্রায় বছরখানেক পূর্বে শেষ হলেও সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট করেননি ঠিকাদার। ঠিকাদারের গাফলতির কারণে প্রতিনিয়ত লোকজনকে বাঁশের মই দিয়ে উঠে ব্রিজ পারাপার হতে হয়। সংযোগ সড়ক না থাকার কারণে এই ব্রিজটি আমাদের এলাকার লোকজনের কোনো কাজেই আসছে না।
ইউপি সদস্য মো. শাহজাহাল সিকদার বলেন, ব্রিজের সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য ঠিকাদারকে অসংখ্যবার তাগিদ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি। এতে মানুষের চরম দুভোর্গের শিকার হচ্ছে। দ্রুত ব্রিজের দুইপাশে মাটি ভরাট করার আহবান জানাই।
এ ব্যাপারে কচুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল আলীম লিটন বলেন, ঠিকাদার আহসান হাবীব অরুণ দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ থাকায় একটু বিলম্বিত হচ্ছে। তবে ব্রিজটি সচল করতে এবং দুই পাশের সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ শুরুর জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। সংযোগ সড়ক তৈরি হলে ব্রিজ দিয়ে মানুষের যাতায়াতে আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।