মায়ের মৃত্যুর পর ভাই-বোনদের সান্ত্বনা দিয়ে মারা গেলেন শফিকুল
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৪ পিএম
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান আছিয়া খাতুন (৭০)। বাড়িজুড়ে চলছিল শোকের মাতম। মৃত বৃদ্ধার পাশে বসে বিলাপ করছিলেন তার ছেলেমেয়েরা। সেই সময় তাদের বারবার সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন আছিয়া খাতুনের বড় ছেলে মুদি দোকান ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম (৫৫)।
কবর খোঁড়া, গোসল করানোর প্রস্তুতি থেকে শুরু করে সব কিছুই একাই দেখভাল করছিলেন তিনি। তবে ব্যস্ততার মাঝেও বারবার এসে মৃত মায়ের মুখ দেখে যাচ্ছিলেন শফিকুল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন শফিকুল। নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। রাত ১টার দিকে শফিকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
রোববার রাতে এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের বড়গুয়াখড়া গ্রামে।
গর্ভধারিণী মায়ের মৃত্যু শোক সইতে না পেরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শফিকুল ইসলাম মারা যান বলে সবার ধারণা।
সোমবার বেলা ১১টায় বড় গুয়াখড়া গোরস্থানে মা-ছেলের একসঙ্গে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা গেছে, বড়গুয়াখড়া গ্রামের মৃত ফরমান আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম। পেশায় তিনি মুদি ব্যবসায়ী ছিলেন। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে শফিকুল ইসলাম সবার বড়। শান্তশিষ্ট ও ধার্মিক মানুষ হিসেবে এলাকায় তার সুখ্যাতি ছিল।
বড় গুয়াখড়া গ্রামের রিপন রহমান নামের এক ব্যক্তি বলেন, শফিকুল ইসলাম মা বলতে অন্ধ ছিলেন। মায়ের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ছিল তার। হয়তো মায়ের মৃত্যুর শোক সহ্য করতে পারেননি তিনি। তবে অল্প সময়ের ব্যবধানে মা-ছেলের এমন মৃত্যু আমাদের ব্যথিত করেছে। গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।