Logo
Logo
×

সারাদেশ

গৃহবধূকে হত্যা করে লাশ ডিপফ্রিজে, ছেলে সাদের জামিন

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ পিএম

গৃহবধূকে হত্যা করে লাশ ডিপফ্রিজে, ছেলে সাদের জামিন

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় বহুল আলোচিত গৃহবধূ উম্মে সালমা খাতুন (৫০) হত্যা ও ডিপফ্রিজে লাশ গুমের মামলায় গ্রেফতার ছেলে সাদ বিন আজিজুরের জামিন হয়েছে।

বুধবার দুপুরে বগুড়ার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শাহজাহান কবির শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

এর আগে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তার আবেদন নামঞ্জুর হয়। আইনজীবী উৎপল কুমার বাগচী এ তথ্য দেন।

এজাহার সূত্র ও পুলিশ জানায়, গত ১০ নভেম্বর দুপুরে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জয়পুরপাড়ার নিজ বাড়িতে মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ এসএম আজিজুর রহমানের স্ত্রী উম্মে সালমা খাতুন খুন হন। পুলিশ বাড়ির ডিপফ্রিজ থেকে তার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে। নিহতের বড় ছেলে নাজমুস সাকিব দুপচাঁচিয়া থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

পরদিন মধ্যরাতে র‌্যাব-১২ বগুড়া কোম্পানির সদস্যরা পার্শ্ববর্তী কাহালু উপজেলার আড়োবাড়ি গ্রামে দাদার বাড়ি থেকে সাদকে গ্রেফতার করেন। পরে র‌্যাব কমান্ডার প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, অনলাইন জুয়াড়ি, মাদকাসক্ত, পরকীয়া প্রেমে জড়িত সাদ হাত খরচের টাকা না পেয়ে নিজে শ্বাসরোধে মা সালমাকে হত্যা করে। এরপর হত্যাকে ডাকাতের কাজ সাজাতে কুড়াল দিয়ে ঘরের আলমিরাতে কয়েকটি কোপ দেয়। এ খবরে শুধু বগুড়ায় নয়; সারা দেশের মানুষের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করে।

এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুপচাঁচিয়া থানার এসআই সুব্রত সিং আসামি সাদ বিন আজিজুরকে তিন দিনের রিমান্ডে নেন। দ্বিতীয় দিনে সাদ চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। বাড়ির তৃতীয়তলার ভাড়াটিয়া মাবিয়া সুলতানা হাসির অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়ায় তিনি সালমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে উপজেলার তালুচ এলাকার মোসলেম উদ্দিন ও সুমন রবিদাসকে অর্থের বিনিময় ভাড়া করেন। তারা ঘটনার দিন দুপুরে রিকশাভ্যানে জয়পুরপাড়ার আজিজিয়া মঞ্জিলে আসেন।

কৌশলে বাড়িতে ঢুকে রান্নার আয়োজন করার সময় গৃহবধূ সালামকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর হাত-পা বেঁধে মরদেহ ডিপফ্রিজে রেখে পালিয়ে যায়। যাওয়ার আগে তারা এ ঘটনা ডাকাতের ওপর চাপাতে ঘরের আলমিরাতে কুড়াল দিয়ে কয়েকটি কোপ দেন। এছাড়া ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করেন। তারা সালমার দুটি মোবাইল ফোন, সিসিটিভি ক্যামেরা ভেবে ইন্টারনেট রাউটার ও বাড়ির প্রধান দরজার চাবি নিয়ে যায়।

পুলিশ প্রথমে তৃতীয়তলা থেকে ভাড়াটিয়া মাবিয়া সুলতানা হাসিকে গ্রেফতার করে। তার স্বীকারোক্তিতে তালুচ গ্রাম থেকে মোসলেম উদ্দিন ও তার বন্ধু সুমন রবিদাসকে গ্রেফতার করে। তিনজনকে রিমান্ডে নিলে তারা পৃথকভাবে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাদের বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

হত্যারহস্য উন্মোচন ও ঘাতকরা গ্রেফতার হওয়ায় পরিবার থেকে সাদের জামিন আবেদন করা হয়; কিন্তু জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাকে জামিন দেননি। বুধবার সাদকে বগুড়ার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শাহজাহান কবিবের আদালতে হাজির করে জামিন প্রার্থনা করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।

আইনজীবী উৎপল কুমার বাগচী জানান, আদালত পুলিশের তদন্ত ও মূল তিন আসামির আদালতে স্বীকারোক্তি পর্যালোচনা করে এ হত্যাকাণ্ডে সাদের সম্পৃক্ততা পাননি। তাই তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।

বাবা আজিজুর রহমান জানান, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে মামলা জজ আদালতে নিয়ে আসায় জামিন করতে বিলম্ব হয়েছে। তিনি তার স্ত্রী উম্মে সালমা খাতুনকে হত্যায় জড়িতদের দ্রুতবিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম