ঈদগাঁর ৯০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ভেটুরিয়া ঈদগাঁ ও কাঙ্গালী পিরের মাজারের সম্পত্তি জবরদখল করে প্রায় ৯০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। ভেটুরিয়া গ্রামের হেতু প্রামাণিকের ওয়ারিশ ছেলে-নাতি ও চকারপুকুর গ্রামের আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ভেটুরিয়া ঈদগাঁ কমিটির বর্তমান সভাপতি দাবিদার আব্দুস সামাদ সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুস সামাদ বলেন, ভেটুরিয়া মৌজায় কয়েকটি দাগে প্রায় ২০ বিঘার অধিক সম্পত্তি কাঙ্গালী পির তৎকালীন মসলিম সম্প্রদায় তথা জনসাধারণের স্বার্থে সিএস খতিয়ানে ভেটুরিয়া গ্রামের হেতু প্রামাণিককে জিম্মাদার নিয়োগ করেন। এরপর থেকে সম্পত্তিগুলো কাঙ্গালী পিরের মাজার এবং একইস্থানে অবস্থিত ভেটুরিয়া ঈদগাঁর উন্নয়নে ব্যয় করে আসছিল। এরই মধ্যে হেতু প্রামাণিক মারা গেলে তার ছেলে-নাতিরা নিজস্ব সম্পত্তি দাবি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোগদখল করতে থাকেন। একপর্যায়ে মসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষে ভেটুরিয়া গ্রামের আব্দুল করিম গত ২০০৭ সালের ২৪ জুলাই আদালতে মামলা করেন। এরপর ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ডিগ্রি পান।
আব্দুস সামাদ দাবি করেন, ১২ বছর ধরে মামলা চলাকালে হেতু প্রামাণিকের ওয়ারিশরা সেকেন্দার ও তার ভাই-ছেলেরা ভোগদখল করে পুকুর, জমি ও ভিটা। সেই জায়গা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির পুরোনো গাছ বিক্রি করে প্রায় ৫১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
তিনি বলেন, আদালতের রায়ের পর একই এলাকার চকারপুকুর গ্রামের আব্দুল হাকিম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের এ পর্যন্ত পুকুরসহ সম্পত্তিগুলো জবরদখল করে। পুকুরপাড়ের একটি শতবর্ষী তেঁতুল গাছ বিক্রিসহ গত ৬ বছরে সাড়ে ৩৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দুর্নীতিকারীদের শাস্তি প্রদান, আত্মসাৎকৃত অর্থ আদায় এবং জিম্মাদারের পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনের সময় স্থানীয় ওসমান আলী, আজিজার রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও শাহাজাহান আলী উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সেকেন্দার আলীর ছেলে দুলাল হোসেন বলেন, সম্পত্তিগুলো আমার দাদার নামে রেকর্ড আছে। সেই অনুযায়ী, আমরা ভোগদখল করেছি। পরে জনসাধারণের পক্ষে প্রতিপক্ষের লোকজন মামলা করে ডিগ্রি পায়। আমরা ডিগ্রির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছি। বর্তমানে মামলা চলমান রয়েছে। এখানে তারা টাকা আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকারপুকুর গ্রামের আব্দুল হাকিম বলেন, ভেটুরিয়া ঈদগাঁ এবং মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। ২০১৯ সালে ডিগ্রি পাওয়ার পর সেকেন্দার ও তার ওয়ারিশরা ডিগ্রির বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেছে। ২০১৯ সাল থেকে সেই মামলা
এখনো পরিচালনা করছি এবং ঈদগাঁ এবং মাজার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। এসব করতে গিয়ে আমার পকেট থেকেই প্রায় এক লাখ ১৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়ে গেছে। আমি কোনো টাকা আত্মসাৎ করিনি। সংবাদ সম্মেলনে সব মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।