অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সামনে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে পুলিশে দিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা
ভিডিও ভাইরাল
বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৭ এএম
প্রতীকী ছবি
নাটোরের বড়াইগ্রামে এক ব্যবসায়ীকে বেধড়ক পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার উপজেলার বনপাড়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে চিকিৎসক দেখাতে বাড়িতে এলে বৃদ্ধ মা-বাবার ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সামনে উজ্জ্বল কুমার মণ্ডলকে (২৫) এভাবে মারধর করা হয়।
এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার আতিকুর রহমান নিজের ফেসবুকে ওই ভিডিও পোস্ট করেন।
বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর শ্মশানঘাট এলাকার সবজি ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ মণ্ডলের ছেলে উজ্জ্বল কুমার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান পিয়াসের অনুসারী বলে জানা গেছে। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে চিকিৎসক দেখানোর জন্য উজ্জ্বল বুধবার বাড়িতে ফেরেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির নেতাকর্মীরা তার ওপর হামলা করেন।
২ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, বনপাড়া পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এ বি এম ইকবাল হোসেন রাজুর অনুসারী শ্রমিক দলের জালাল ভূঁইয়া, যুবদলের জাহাঙ্গীর আলম, শুভসহ ৮-১০ জনের একটি দল লাঠিসোটা নিয়ে উজ্জ্বলের বাড়িতে এসে তাকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। উজ্জ্বলের বৃদ্ধ মা-বাবা তাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তাদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। তারা আবার এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। এ সময় তিনি হামলাকারীদের পা ধরে মার বন্ধ করার অনুরোধ করলেও তারা শোনেননি। একপর্যায়ে উজ্জ্বল অচেতন হয়ে গেলে তাকে বসিয়ে পানি খাওয়ানো হয়।
বিএনপির নেতারা পরে পুলিশে খবর দিলে তারা এসে উজ্জ্বলকে উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে তাকে ফৌজদারি আইনের ১৫১ ধারায় আটক দেখিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালতে পাঠায়। আদালত ওই দিনই তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এ ঘটনা নিয়ে ভুক্তভোগী ও তার পরিবার এমনকি প্রতিবেশীরাও সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানাতে সাহস পাননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রতিবেশী ঘটনাটি নির্মম দাবি করে দায়ীদের বিচার চেয়েছেন।
বনপাড়া পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এ বি এম ইকবাল হোসেন রাজু বলেন, ভিডিওটি দেখেছি। যারা এটি করেছে তারা অন্যায় করেছে। আমি অভিযুক্তদের ডেকে শাসন করেছি এবং ভবিষ্যতে যেন এমন কাজ না করে সেটা বলেছি।
বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে উজ্জ্বলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরে তাকে ১৫১ ধারায় আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।