সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে নারীকে হত্যা
বরগুনা (দক্ষিণ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২২ পিএম
বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ এলাকায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে বিধবা এক নারীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। দুর্বৃত্তরা হত্যার পর ঘরের মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পালিয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে স্বজনদের দাবি জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত নাসিমা বেগম (৫৫) ওই এলাকার বাসিন্দা এবং দীর্ঘদিন ধরে একাই বসবাস করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত নাসিমা বেগমের স্বামী আব্দুল হাই মারা গেছেন ২০ বছর আগে। তার তিন মেয়ে খুলনায় বসবাস করেন। তিনিও খুলনায় বসবাস করতেন। ৫-৬ বছর আগে তিনি কাজিরাবাদ এলাকার বাবার বাড়িতে একাই থাকা শুরু করেন। গত বুধবার দিবাগত রাতে নিজ ঘরে একা ঘুমিয়ে ছিলেন নাসিমা বেগম। প্রতিবেশীরা সকালে ঘরের সিঁধ কাটা অবস্থায় দেখতে পান। পরে কোনো সাড়া-শব্দ না পাওয়ায় প্রতিবেশীরা তার ঘরে যান এবং ভেতরে নাসিমা বেগমের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে।
প্রতিবেশী মমতাজ বলেন, আমার ডায়াবেটিস তাই প্রতিদিন সকালে আমি হাঁটতে বের হই; আজকে সকালে দেখি ঘরের পেছনে সিঁধ কাটা। এরপর আমি ডাক-চিৎকার দিলে সবাই আসে কিন্তু নাসিমা আপার সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকেও তাকে পাইনি। পরে দেখি বিছানার উপর কম্বল স্তূপ করা, সেটি সরানোর পর তার মুখ দেখতে পেয়ে আমরা পুলিশকে খবর দেই।
নিহতের ফুফাতো ভাই শাহজাহান বলেন, ঘটনা শুনে আমরা বাড়িতে এসে দেখলাম সিঁধ কেটে আমার বোনকে হত্যা করা হয়েছে। যদি এটি চুরির জন্যই হতো তবে আমার বোনকে আহত করতে পারত। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আগে থেকেই জমি নিয়ে তার চাচাদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। সামান্য চুরির ঘটনায় মানুষ মেরে ফেলতে পারে এটা আমি বিশ্বাস করি না। আর আজকে ঘটনার রাতে তার প্রতিবেশী আত্মীয়দের ঘরে কোনো পুরুষ ছিল না, সবাই নাকি বেড়াতে গেছে। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে এ হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আবদুল হালিম বলেন, গতরাতে নাসিমা বেগম নামের এক মহিলাকে সিঁধ কেটে ঢুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং ওনার গায়ের স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। যেহেতু তিনি একা থাকতেন এবং নিকট আত্মীয়রা এখনো এসে পৌঁছাননি তাই এখান থেকে আর কী নিয়েছে তা এখনো বলতে পারছি না। আমরা ক্রাইমসিন টিম খবর দিয়েছি। এখানে যদি আরও কিছু ফরেনসিক আলামত পাওয়া যায় তার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। ক্রাইমসিমের কাজ শেষ হলে আমরা মরদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠাব। পোস্টমর্টেম সম্পন্ন হলে বোঝা যাবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কি। এটা হত্যাকাণ্ড না অন্য কিছু। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলমান আছে।